নাটকে নতুন মোড়, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছেন সাকিব
'শেষ হইয়াও হইলো না শেষ'- কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা লাইনটার মতোই অবস্থা সাকিব আল হাসানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া নিয়ে শুরু হওয়া নাটকের। এই নাটকে একের পর এক মোড় বদল হয়েছে, শনিবার দেখা মিললো পুরোপুরি নতুন মোড়ের। নানা নাটকীয়তার পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে খেলতে রাজি হয়েছেন সাকিব।
তিন ভাগে বাংলাদেশ দল চলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার রোববার যাবেন আলাদা করে। শনিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের সিদ্ধান্ত বদলান সাকিব। পরে সংবাদমাদ্যমকে বিষয়টি জানান নাজমুল হাসান। এ সময় সাকিবও উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া নিয়ে সাকিব বলেন, 'পাপন ভাইয়ের আমার পরশু রাতে এবং আজ কথা হয়েছে। আমরা পুরো বছরের পরিকল্পনা করতে পেরেছি। আমি তিন ফরম্যাটেই অ্যাভেইলেবল থাকব। বোর্ড অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবে কোন সময় আমাকে বিশ্রাম দিতে হবে। এখন আমার সিদ্ধান্ত, আমি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছি।'
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, 'গত কয়েকদিন ধরেই আমাদের কথা হচ্ছে। আজ আমরা বসেছিলাম পুরো বিষয়টি নিয়ে। সাকিবের সঙ্গে তিন ফরম্যাটের পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাকিব তার একটা সিদ্ধান্ত আমাদের জানিয়েছে। ওর সিদ্ধান্ত কী সেটা ওর মুখ থেকেই আপনারা শুনুন।' এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার কথা জানান সাকিব।
নাজমুল হাসান আরও বলেন, 'পরশু দিন দেশে এসে আমাকে জানাল ও একটু মানসিকভাবে এলোমেলো। এটা আমাদের সব সময়ই হয় কোনো না কোনো সময়। এ জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। আমার সঙ্গে আলোচনা শেষে সে জানিয়েছে, সে সব সংস্করণে খেলতে ইচ্ছুক এবং এটা এই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই।'
সিনিয়র ক্রিকেটারদের পক্ষে তিন ফরম্যাটে টানা খেলে যাওয়া কঠিন বলে মনে করেন নাজমুল হাসান। বিসিবি সভাপতির ভাষায়, 'সিনিয়র খেলোয়াড় যারা আছে, তাদের কিন্তু তিন ফরম্যাটে খেলাটা অনেক বেশি চাপের। টানা এক বছরে এতো খেলা বেশ কঠিন। এটা বুঝেই কিন্তু আমি বলেছিলাম খেলোয়াড়দের মাঝে মধ্যে বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। সে জন্য আমি বলেছিলাম কেউ যদি খেলতে না চায়, তাহলে আগে জানিয়ে দেবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য সমস্যার কারণ।'
দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে চাননি সাকিব। মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত জানিয়ে সফর থেকে ছুটি চেয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। এরপর অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়, কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তিনি। সাকিবের সঙ্গে কথা বলে সফর থেকে তাকে ছুটি দেয় বিসিবি। মানসিক-শারীরিকভাবে পুরোপুরি ফিট হতে সাকিবকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই বিশ্রাম দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কিন্তু তিন দিনের মাথায় আবারও বদলে গেল সিদ্ধান্ত।
গত সপ্তাহে দুবাই যাওয়ার আগে সাকিব বলেছিলেন, 'দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নিয়ে যেটা বলতে হয়, মানসিক ও শারীরিক যে অবস্থায় আছি, আমার কাছে মনে হয় না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সম্ভব খুব একটা। এই কারণে আমার মনে হয়, যদি আমি একটা বিরতি পাই, আমি যদি ওই আগ্রহটা ফিরে পাই, তাহলে আমার খেলাটা সহজ হবে। আমার মনে হয় না এ রকম মন মানসিকতা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ খেলাটা ঠিক হবে।'