তামিমের ম্যাচসেরা মিরাজও
তার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ারই ঠিক ছিল না, বিষয়টি নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। কিন্তু মাঠে নামলেই যে দুনিয়া ভুলে যান সাকিব আল হাসান, সেটা আবারও প্রমাণিত। সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তিনিই। ব্যাট হাতে ৭৭ রানের মহা কার্যকর ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিবই।
কিন্তু বোলাররাও যে কাণ্ডারির ভূমিকায় ছিলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ যেভাবে জ্বলে উঠে টপাটপ ৪ উইকেট নিয়ে নেন, তাতে জয়ের পথটা সহজ হয়ে যায় বাংলাদেশের। শুরুতে বেশ রান খরচা করা মিরাজই লেখেন দারুণ এক ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। যা তাকে তামিম ইকবালের কাছে নায়ক করে তুলেছে।
সাকিব ম্যাচসেরা, তবে মিরাজকেও একই সিংহাসনে বসাতে চান তামিম। ম্যাচের পর তামিম জানালেন, মিরাজও তার ম্যাচসেরা। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, 'তার আত্মবিশ্বাস দেখে আমি খুব খুশি। এমন চাপের মধ্যে ডানহাতির সামনে ছোট বাউন্ডারিতে বোলিং করা, উইকেট এনে দেওয়া বড় বিষয়। আমার মতে সেও আমার ম্যান অব দ্য ম্যাচ।'
অথচ বল হাতে মিরাজের শুরুটা দলের চাওয়া মাফিক ছিল না। প্রথম ৩ ওভারে তার খরচা ২৫ রান। চতুর্থ ওভারটা বেশ খরুচে, এক ছক্কা ও চারে ১৩ রান। ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। তামিম হয়তো মিরাজকে বোলিংয়ে আনতে সাহসই পাচ্ছিলেন না। এমন সময়ে মিরাজই চ্যালেঞ্জটা নেন। নিজেই গিয়ে বল চান বাংলাদেশের ডানহাতি এই স্পিনার। তামিমকে বলেন তাকে বোলিংয়ে আনতে, তাহলে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেবেন তিনি। বিশ্বাস রাখেন তামিম, সেই বিশ্বাস বিফলে যেতে দেননি মিরাজও। পরের ৫ ওভারে ২৩ রান খরচায় তুলে নেন ৪ উইকেট।
মিরাজকে বোলিংয়ে আনার গল্পটা কেমন ছিল? শুনুন তামিমের মুখ থেকেই, 'আমি মনে করি, প্রতিটি দলে মিরাজের মতো চরিত্র প্রয়োজন। প্রথম ৪ ওভারে ৪০ (৩৮) রান দেওয়ার পর সে আমার কাছে এসে বলে, "আমাকে বল দিন, আমি খেলা বদলে দিব"। সে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল। এটি অধিনায়কের কাজ সহজ করে দেয়, যখন আপনার খেলোয়াড়রা নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাসী থাকে। সব সময় হয়তো আমাদের পক্ষে আসবে না, কখনও কখনও আমাদের বিপক্ষেও যেতে পারে।'
২০ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ নিলো বাংলাদেশ, তামিমের কাছে এটা বিরাট পাওয়া। মাত্র চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নেমে হাফ সেঞ্চুরি করা ইয়াসির আলী রাব্বি ও পেসারদের প্রশংসা করে তামিম বলেন, 'এটা আমাদের জন্য অনেক বড় জয়। দল যেভাবে খেলেছে, তাতে খুবই গর্বিত। ইয়াসিরের ইনিংসটা সত্যিই স্পেশাল ছিল। ব্যাট হাতে মিরাজ থেকে শুরু করে মাহমুদউল্লাহ- ছোট ছোট সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের জন্য একটা বড় বিষয়- আমাদের পেসাররা ভালো করছে এবং আমাদের ম্যাচ জেতাচ্ছে। গত দুই বছরে পেসরার দুর্দান্ত বোলিং করেছে।'