অসাধারণ সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় জয়ের ইতিহাস
মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। অভিজ্ঞতায় একেবারেই কাঁচা, এর মধ্যে আবার দলের ব্যাটিং লাইন আপ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। এমন সময়ে তরুণ যে কেউই দিক হারিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের এই সদস্য সেই দলের নন। তিনি নির্ভীক, সাহসী, দায়িত্বশীল। দলের দুঃসময়ে হাল ধরে অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি তুলে নিলেন বাংলাদেশের ডানহাতি এই ওপেনার।
ডারবানের কিংসমিড স্টেডিয়ামে চলমান টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের কাণ্ডারী জয়ই। অধিনায়ক মুমিনুল, মুশফিকুর রহিম, সাদমান ইসলামরা যেখানে সামান্যতম প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারেননি, সেখানেই জয় পৌঁছে গেলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টেই প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়ে গেলেন তরুণ প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যান, গড়লেন রেকর্ডও।
জয়ের সেঞ্চুরির কারণেই বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মুখ থুবড়ে পড়েনি। সেই সাথে রেকর্ডও হয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেও প্রথম সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান তিনি। এতোদিন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল মুমিনুলের। ২০১৭ সালের সফরে পচেফস্ট্রুমে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৬৭ রানে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মুমিনুল হকের দলের শুরুটা হয় চরম অগোছালো। দলীয় ২৫ রানেই ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিককে হারায় তারা। সাদমানকে ফেরানোর পর স্পিন ঘূর্ণিতে বাংলাদেশকে পথ ভুলিয়ে দেন প্রোটিয়া স্পিনার সাইমন হার্মার। তার বোলিং তোপে ৯৪ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ব্যতিক্রম কেবল জয়, নিয়মিত উইকেট পতনের মাঝেও আস্থার প্রতীক হয়ে উইকেটে টিকে থাকেন তিনি। তৃতীয় দিন নাইট ওয়াচম্যান তাসকিন আহমেদকে নিয়ে শুরু করেন জয়। এদিনও শুরুতেই উইকেটের পতন। তাসকিন ফিরে যান প্রথম বলেই। এরপর লিটন কুমার দাসের সঙ্গে ৮২ রানের জুটি বাধেন জয়।
লিটন ৪১ রান করে ফিরে গেলে নতুন সঙ্গী হিসেবে ইয়াসির আলী রাব্বিকে পান জয়। তবে রাব্বির সঙ্গে তার জুটি জমেনি, দুর্ভাগ্যবসত রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় দারুণ শুরু করা রাব্বিকে। ২২ রান করে রান আউট হন ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
রাব্বির বিদায়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে এগোতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে ৩৬ রানের জুটি গড়েছেন তারা দুজন, বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে ২৫০ রানের সীমানা। এর মাঝেই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জয়। ১০০ ওভারেরও বেশি সময় ধরে উইকেটে থেকে ২৬৯ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় সেঞ্চুরিতে পৌঁছান বাংলাদেশের এই ওপেনার।