কোথায় হারালেন নূপুর শর্মা!
স্থানীয় এক টেলিভিশন বিতর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নূপুর শর্মা। তার সেই মন্তব্যে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে, বিক্ষোভে অংশ নেয় বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকেরা। নূপুরকেও দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, দায়ের হয় একাধিক মামলা। এরপর থেকে নাকি তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!
মহানবী (সা.)-কে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য বিভিন্ন থানায় নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্র পুলিশের দাবি, নূপুর শর্মাকে তারা কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না।
মুসলিম সংগঠন রাজা একাডেমির যুগ্ম সম্পাদক ইরফান শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে মুম্বাই পুলিশও নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, বিদ্বেষে উসকানি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে এফআইআরটি নথিভুক্ত করা হয়।
এ মর্মে নূপুর শর্মাকে আগামী ২৫ জুন তারিখে মুম্বাইয়ের পাইধোনি থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়।
মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির বাসিন্দা নূপুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশের একটি দলকে সেখানে পাঠানো হয়, কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, মুম্বাই পুলিশের হাতে নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। পাঁচদিনের ওপরে তাকে দেশটির রাজধানীতে খুঁজে চলেছে পুলিশ।
এদিকে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাতিল অভিযোগ করে বলেছেন, দিল্লি পুলিশ নূপুর শর্মাকে সনাক্ত করতে যথাযথ সহযোগিতা করছে না।
তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি (সংখ্যালঘু) সেলের সাধারণ সম্পাদক আবুল সোহেলের অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশও নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। কলকাতা পুলিশ তাকে আগামীকাল (২০ জুন) সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তলব করেছে। তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি এবং হায়দরাবাদ পুলিশও।
প্রসঙ্গত, বিজেপির দলীয় মুখপাত্র নুপূর শর্মা গত ২৬ মে একটি টিভি চ্যানেলে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে দলের দিল্লি শাখার মিডিয়া ইউনিটের প্রধান নবীন জিন্দাল টুইটারে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন, পরে তিনি পোস্টটি মুছে দেন।
নুপূরও পরে টুইটারে ক্ষমা চেয়ে একটি পোস্ট করে বলেন, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা তার উদ্দেশ্য ছিল না।
এ ঘটনায় ভারতীয় মুসলিমদের তোপের মুখে পড়ে বিজেপি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমরা বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে।
মহানবীকে অবমাননার ঘটনাটি দেশটির আরব বাণিজ্য সহযোগীদের নজরে পড়লে সেখানেও বাড়তে থাকে অসন্তোষ। চাপের মুখে ২৪ ঘণ্টার মাথায় বিজেপি শাস্তিস্বরূপ বিতর্কিত দুই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
নূপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং নবীন জিন্দালকে বহিষ্কার করা হয়। বিবৃতি জারি করে দলটি বলে, তারা 'কোনো সম্প্রদায় বা ধর্মকে অবমাননা করে' এমন মতাদর্শের বিরুদ্ধে এবং 'এ ধরনের কোনো মানুষ বা দর্শনকে উৎসাহ দেয় না' বিজেপি।