দুর্নীতি মামলায় তারেক-জোবাইদাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট
২০০৭ সালের ৪.৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে 'পলাতক' ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
১৫ বছর আগে তাদের করা রিট আবেদনও খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার দুপুরে বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারক কাজী মোঃ ইজারুল হকের বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও হিসাববিবরণীতে সম্পদ গোপন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলা ও এর প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিল তারেক ও তার স্ত্রী। এই রিটই খারিজ করেন হাইকোর্ট।
সেইসঙ্গে মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিম্ন আদালতকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে মামলাটির রেকর্ড আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় দুর্নীতির মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর আগে ১৯ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ মামলার রায়ের জন্য আজ (২৬ জুন) দিন ধার্য করেছিলেন।
প্রায় ১৫ বছর আগে দুদকের এই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে তিনটি পৃথক রিট জমা দেন তারা।
সে সময় হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন। তারেক ও জোবাইদা রুলের বিরুদ্ধে আরও তিনটি রিট আবেদন করে শুনানি চেয়ে আবেদন করেন।
অবশেষে গত ২৯ মে হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে রিটগুলো। সেদিন তারেক-জুবাইদার আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন দুদকের আইনজীবী।
৫ জুন তারেক ও জুবাইদাকে পলাতক ঘোষণা করা যায় কি না এবং তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা যায় কিনা তা নিয়ে প্রথম শুনানি হয়।
একই প্রশ্নে শুনানি হয় ১২ ও ১৯ জুনও।
আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল শুনানি করেন , দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
শুনানির সময় আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, তারেক রহমান তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। তারেককে পলাতক ঘোষণা করার জন্য এসব শর্তই যথেষ্ট।
এছাড়া ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ এক রায়ে তারেকের স্ত্রী জোবাইদাকে পলাতক বলে জানান। খুরশীদ বলেন, তারেক এবং জুবাইদাকে আদালত পলাতক ঘোষণা করায় তারা আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন না ।
অন্যদিকে, তারেক ও জোবাইদার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী আদালতে বলেন, 'মামলাটি ভ্রূণ অবস্থায়। এখনো অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি। তাই আত্মসমর্পণ করার পর্যায়ে আসেনি।'
'তারেক যখন রিট করেন, তখন তিনি পলাতক ছিলেন না। কোনো মামলায় কেউ দণ্ডিত হলে বিচারাধীন অপর মামলায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পলাতক হয়ে যাবেন, এমন নজির দেখছি না। তারেক এ মামলায় জামিন পেয়েছেন, যা আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন। তাই এ মামলায় তাঁকে পলাতক বলা যাবে না', বলেন তিনি।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আপিল বিভাগ রায়ে বলে দিয়েছেন, জোবাইদা পলাতক। এ কারণে তিনি আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে পারবেন না।