উদীয়মান অর্থনীতিতে করোনার প্রভাবে সুদহার কর্তনের উদ্যোগ
গত সপ্তাহের শুরুতে ৫০ বেসিস পয়েন্টের ভিত্তিতে সুদহার কমায় বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক-ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পর উদীয়মান দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকও আগ্রাসীভাবে সুদহার কমানোর উদ্যোগ নেবে বলে শীর্ষ বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন।
করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে এশিয়া মহাদেশ। আর এখানেই সুদহার কর্তনের সিংহভাগ উদ্যোগ দেখা যাবে, এমনটা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা পুরো বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশ এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে আগ্রাসীভাবে সুদহার কমাবে বলে অনুমান করছেন। খবর সিএনবিসির।
গত বুধবার এক গবেষণা নোটে ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের উদীয়মান বাজার বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড গ্লোসপ এমন মন্তব্য করেছেন। তার মতে, স্থানীয় পুঁজিবাজার করোনার প্রভাবে গতি হারানো শুরু করা মাত্রই এসব বাজারের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শেষ অস্ত্র হিসেবে সুদহারের আগ্রাসী কর্তন চালু করতে পারে।
এই অবস্থায় প্রথমদিকে ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো, পোলান্ডের এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিকাশমান বাজারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রাথমিকভাবে সুদহার কমাতে চলেছে বলে এডওয়ার্ড জানিয়েছেন।
তার মতে, করোনার প্রভাবে এসব দেশের পুঁজিবাজার গভীরভাবে প্রভাবিত হবে। ইতোমধ্যেই প্রকাশিত পারচেজিং ম্যানেজার সূচক বা পিএমআই ইনডেক্সগুলো সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের এসব পিএমআই'তে সমগ্র এশিয়ার অর্থনীতিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ যে স্থবিরতা তৈরি করেছে সেই চিত্র উঠে আসে।
এই অবস্থায় ক্যাপিটাল ইকোনমিক্স চলতি বছর মোট বৈশ্বিক পণ্য উৎপাদন প্রবৃদ্ধি আশঙ্কাজনকহারে কমবে বলে অনুমান করছে। এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও একই অনুমান প্রকাশ করে।
তবে পণ্য উৎপাদন কমার দিক থেকেও উদীয়মান বাজারগুলো শীর্ষ ক্ষতির তালিকায় থাকবে। এসব দেশে উৎপাদন শিল্পের পাশাপাশি সেবাখাতেও দেখা দেবে মন্দা। যেমন; করোনার কারণে মিসর এবং মেক্সিকোর পর্যটনখাতের আয়ে খাড়া পতন দেখা যেতেই পারে।
উল্লেখ্য, আলোচিত দুই দেশে পর্যটনখাত মোট জিডিপিতে যথাক্রমে ৭ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ অবদান রাখে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের পূর্বাভাস, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ভারত সুদের হার ৬০ বেসিস পয়েন্ট কমাবে। মেক্সিকো কমাবে ৫০ বেসিস পয়েন্ট। আর ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা কমাবে ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে।
এদিকে ডলারের বিনিময় হার দুর্বল হলে বিনিয়োগ প্রবাহ উদীয়মান বাজারমুখী হবে বলে অনুমান করছেন ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজম্যান্টের শীর্ষ কর্মকর্তা মারক হায়েফলে। তার মতে এই অবস্থায় উদীয়মান পুঁজিবাজারগুলোয় শেয়ারের দরে উত্থান পূর্ব প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যেতে পারে।