চার মাসে হুন্ডিতে ২৪ হাজার কোটি টাকা পাচার: সিআইডি
দেশের বিভিন্ন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার (এমএফএসপি) এর প্রায় পাঁচ হাজার এজেন্ট গত চার মাসে হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এমএফএস-এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অর্থ পাচারের মূল হোতাসহ একটি গোষ্ঠীর ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য প্রকাশ করেছে তারা।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিকাশ, নগদ, উপায় এবং রকেটের সন্দেহভাজন এজেন্টরা।
সিআইডি'র অনুমান, গত বছরে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে প্রায় ৭.৮ বিলিয়ন ডলার বা ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে।
ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পরিচালিত সাম্প্রতিক তদন্তে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স হ্রাস পেয়েছে।
বিএফআইইউ-এর তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে পরিচালিত তিনটি পৃথক অভিযানে হুন্ডি চক্রের সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি নগদ ১০ লাখ টাকা, প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার ডিজিটাল মানি, ৩৩টি সিম, ৩৪টি মোবাইল ফোন, তিনটি ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ, ট্যাব, মডেম ও চেক বইসহ অন্যান্য জিনিসপত্র জব্দ করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আক্তার হাসান (৪০), দিদারুল আলম সুমন (৩৪), খোরশেদ আলম ইমন (২২), রুমন কান্তি দাস জয় (৩৪), রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ (৪৫), মো. হোসাইনুল কবির (৩৫), নবীন উল্লাহ (৩৭), মো. জুনাইদুল হক (৩০), আদিবুর রহমান (২৫), আসিফ নেওয়াজ (২৭), ফরহাদ হোসেন (২৫), আব্দুল বাছির (২৭), মাহাবুবুর রহমান সেলিম (৫০), আব্দুল আউয়াল সোহাগ (৩৬), ফজলে রাব্বি (২৭) এবং শামীমা আক্তার (৩২)।
সিআইডির বিবৃতিতে বলা হয়, সন্দেহভাজনদের বেশিরভাগই এমএফএস ডিস্ট্রিবিউটরদের কর্মচারী। তারা প্রায় ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা পাচার হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজধানীর খিলগাঁও ও মোহাম্মদপুর থানায় মোট দুটি অর্থপাচারের মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় শীঘ্রই চট্টগ্রাম কোতয়ালী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হবে।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, পাচারকারীরা তিনটি দলে কাজ করে। প্রথম দলটি প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ সংগ্রহ করে, দ্বিতীয় দলটি রূপান্তরিত অর্থ বাংলাদেশে এমএফএস এজেন্টদেরকে প্রদান করে।
তৃতীয় গ্রুপে থাকা সবাই বিভিন্ন এমএফএস-এর জন্য কাজ করে। তারাই প্রবাসীদের দেওয়া নম্বরগুলোতে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ পাঠায়।
বিএফআইইউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে শ্রমিক রপ্তানি বাড়লেও ব্যাংকিং মাধ্যমে রেমিট্যান্স কমছে।
আবার বিদেশ ভ্রমণকে নানাভাবে নিরুৎসাহিত করার পরও দেশের বাজারে নগদ ডলারের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২১.০৩ বিলিয়ন ডলারের সমতুল্য অর্থ পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার (১৫ শতাংশ) কম।