দাম কমে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা
৭ দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ৫৫থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আর ডিমের দাম ডজনে কমেছে ১০ টাকা।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) মগবাজার এলাকার বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৬০ থেকে ২৬৫ টাকা।
মগবাজার নয়াটোলা এলাকার বিক্রেতা মোহম্মদ আকাশ বলেন, "সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ৬০ টাকা। আজকে ২০০ টাকা বিক্রি করছি।"
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ডিমের ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আমীর বলেন, 'আজ আমরা ২০০ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছি।'
সম্প্রতি বাজারে ব্রয়লার মুরগির মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে মুরগি উৎপাদনকারী চার প্রতিষ্ঠানকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো কম দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান এএইচএম সফিকুজ্জামান চার মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, কাজী ফার্মস লিমিটেড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড, সিপি বাংলাদেশ ও প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান।
ভোক্তা অধিকার প্রধান বলেন, 'এই কোম্পানিগুলো প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা পাইকারি দরে মুরগি বিক্রি করবে। বর্তমানে মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়।'
এরপর থেকে বড় কোম্পানিগুলো খামারে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি শুরু করে। তারপরই খুচরা বাজারে ব্রয়লারের দাম কমতে শুরু করে।
বিক্রেতারা বলছেন, পাইকরি বাজারে দাম কমা এবং রমজান মাসে হোটেলগুলোতে চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান কমে যাওয়ায় মুরগির চাহিদা কমেছে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মোহম্মদ সজল বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কমার কারণে তারা কম দামে বিক্রি করতে পারছেন। তবে হোটেলগুলোতে মুরগির চাহিদা কম থাকায় রোজার আগের তুলনায় তাদের বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
তবে ক্রেতারা বলছেন, মুরগির দাম সামান্যই কমেছে।
একজন ক্রেতা বলেন, "দামটা এখনও বেশি মনে হচ্ছে। প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা থাকলে ভালো হতো।"
খাসির মাংস ১,১০০ টাকা কেজি, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা
মোহম্মদ নিজাম ১,১০০ টাকা দিয়ে এক কেজি খাসির মাংস কিনেছেন কারওয়ান বাজার থেকে।
নিজাম বলেন, 'বড় মেয়ে রমজানে খাসির মাংস খেতে চেয়েছে। ওকে তো আর বলতে পারি না দাম বেশি। সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করে মাসে ১২ হাজার টাকা বেতন পাই। তেজগাঁও এলাকায় ছোট একটি রুম নিয়ে থাকি, ভাড়া ৪ হাজার টাকা। আমাদের এই আয়ে খাসির মাংস খাওয়া মানায় না। যেভাবে যরচ বাড়ছে, ভাবছি ঈদের পর পরিবারকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেব।
বাজার ঘুরে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দাম কমেছে লেবু, শসা ও বেগুনের
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন ও শসার দাম কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। কারওয়ান বাজার ও মগবাজারে বেগুন ও শসা ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি।
বাজারে কাঁচামরিচ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ৮০ টাকা ছিল।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আলম বলেন, 'সবজির দাম কমেছে গত সপ্তাহের তুলনায়। গত সপ্তাহে পটল বিক্রি করেছিলাম ৭০-৮০ টাকা, এখন বিক্রি করি ৫৫ টাকা কেজি। সিম কেজি ৩০ টাকা।'
ক্রেতা মোহম্মদ আজমল বলেন, 'সবজির দাম কিছুটা কমায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে এখনও তেলের দাম কমছে না। এক লিটার খোলা সয়াবিন তেল কিনলাম ১৮০ টাকায়।'
এদিকে বোতলতাত সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।