মামলায় আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে মনোযোগ বাড়াচ্ছে এনবিআর
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বর্তমানে মামলায় আটকে থাকা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের উপায় খুঁজছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রাজনৈতিক অচলাবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে অর্থনৈতিক গতিমন্থরতায় অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। বিবদমান মামলাগুলোর নিষ্পত্তির মাদবমে আটকে থাকা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে চায় এনবিআর।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভায় এনবিআরের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান মামলায় আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সভায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের রাজস্ব আদায়ের তথ্যও উপস্থাপন করা হয়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে মামলায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে আছে বলে মনে করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। এনবিআরের আপিলাট ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্ট ডিভিশনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এসব মামলা দ্রুত সম্পন্ন করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব সরকারের কোষাগারে আনার নির্দেশনা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
এছাড়া কর ফাঁকি বন্ধ, অডিট কার্যক্রম জোরদার করা, করযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনার নির্দেশনাও দিয়েছেন আবদুর রহমান।
সভায় উপস্থিত এনবিআরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'মামলায় আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনা ও ফাঁকি বন্ধ করার ওপর জোর দিয়েছেন চেয়ারম্যান।'
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আদায় ব্যাপকভাবে কমেছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। এছাড়া গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় কমেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।
অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং পরবর্তী সময়ে এর প্রভাব থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিমন্থরতা ছিল, আমাদানিও কম হয়েছে। যার কারণে রাজস্ব আদায় কমে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে আয়কর ও কাস্টমস থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইমএমএফ) ঢাকা সফররত প্রতিনিধি দলকে অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর।
আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ঋণের শর্তানুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে বার্ষিক কর-জিডিপি অনুপাত ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য রয়েছে।