ভোজ্যতেলে ভ্যাট প্রত্যাহার বিবেচনা করছে এনবিআর, শীঘ্রই আসতে পারে সিদ্ধান্ত
ক্রমেই চড়তে থাকা ভোজ্যতেলের দামে লাগাম টানতে আমদানি ও সরবরাহ পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর)।
এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া আমদানি পর্যায়ে রিডিউসড রেট এর শুল্ক সুবিধা আরও আড়াই মাস বাড়ানো হয়।
ভোজ্যতেলের উপর ভ্যাট প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন অ্যান্ড মিনিস্ট্রি অব কমার্স এ পর্যন্ত তিনবার অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআরকে। সর্বশেষ গত সোমবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এক সভায় তিন মাসের জন্য ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
এনবিআরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের দাম কমানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা তা পর্যালোচনা করছি। এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।"
তবে সিদ্ধান্ত হলে দ্রুতই তা কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে ভোজ্যতেলের আমদানি মূল্যের উপর আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এর পর স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রির সময়ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে, এ থেকে আমদানিতে দেওয়া ভ্যাট সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।
তবে আমদানিনির্ভর ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে যাওয়ায় এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভ্যাটের পরিমাণও বাড়তে থাকে, যা ভোক্তা পর্যায়ে আরও চাপ তৈরি করে।
দাম বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরেই ভোজ্যতেলের উপর ভ্যাট কমানোর দাবি আসতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুরোধ জানালেও ভ্যাট কমানোর পক্ষে ছিল না এনবিআর।
সম্প্রতি এনবিআরে প্রাক বাজেট আলোচনায় কর ছাড়ের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম ছাড় না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির কথা বলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ১২ টাকা দাম বাড়ানোর অনুমতি চান। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিটিং করে দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি স্থগিত করে দেয়।
এরপর থেকেই শুরু হয় তেলের বাজারে অস্থিরতা। গত বৃহস্পতি-শুক্রবার বাজারে তেল পাওয়া যায়নি।
যেসব খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তেল ছিল তারা ১৬৮ টাকার তেল ১৮০-১৯০ টাকায়ও বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে থাকে ২০২০ সালের শেষ দিক থেকে। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, এক বছরে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ২৪ শতাংশের বেশি।