প্রধান উপদেষ্টাকে অ্যান্টি প্রোপাগান্ডা সেল গঠনের পরামর্শ ছাত্রনেতাদের
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অ্যান্টি প্রোপাগান্ডা সেল গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
চলমান পরিস্থিতির মধ্যে জাতীয় ঐক্য গঠনে আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাম্প্রতিক উত্তেজনা, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক, সাম্প্রদায়িক ইস্যু, দ্রব্যমূল্যের ঊধ্র্বগতি ইত্যাদি নিয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসেন ড. ইউনূস।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় তাদের পরামর্শগুলোর নোট নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কীভাবে বিশ্বের দরবারে ভালো করে প্রচার করা যায়, বৈঠকে সেটা বলেছি। কারণ, বিশ্ব মিডিয়াতে অনেক অপপ্রচার চলছে। এজন্য এন্টি প্রোপাগান্ডা সেল গঠনের বিষয়ে কথা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে হাসনাত বলেন, বৈঠকে পানির ন্যায্য হিস্যা ও সীমান্ত হত্যার বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছি। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেন ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়, সেটি নিশ্চিতের কথা বলেছি।
তিনি আরো বলেন, ভারতের সরকার বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আওয়ামী লীগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমাদের অস্বস্তির জায়গা সেটিই। আমরা চাই জনগণের সঙ্গে জনগণের ও রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক হোক।
হাসনাত বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ন্যারেটিভ নির্মাণ করেছে যে তারা ক্ষমতায় থাকলে হিন্দু ধর্মের স্বার্থ রক্ষা হবে। কিন্তু আওয়ামী সরকার যেভাবে সংখ্যালঘুকে নিপীড়ন করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে, তার উদাহরণ দ্বিতীয়টি নেই।
সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, হিন্দু ধর্মের অনেক ভাইয়েরা আছেন যারা ফিজিক্যালি বাংলাদেশি কিন্তু মানসিকভাবে ভারতীয় ধ্যান-ধারণা পোষণ করেন। কিছু সংখ্যক যারা এখানে বসে ষড়যন্ত্র করছেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার প্রশ্নে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে লড়াই করব।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য গঠনে ছাত্রনেতা, রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূসের পৃথক সংলাপে বসার কথা জানান তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকটি আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত হওয়ার কথা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হবে। আর আগামীকাল বিকেল চারটায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা আছে। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকটি হবে বৃহস্পতিবার, তবে সময়টি এখনো ঠিক হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'এই দুই মিটিংয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে তিনি ন্যাশনাল ইউনিটির ডাক দেবেন।'