বাড়তি দামেই ভোজ্যতেলের সরবরাহ শুরু বাজারে
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাজারে সয়াবিন তেল সরবরাহ শুরু করেছে ভোজ্যতেল রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এ দুটি বড় শহরের বাজারগুলো তেলের সংকট কাটাতে শুরু করলেও বাইরের শহর ও গ্রামাঞ্চলে এখনো সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।
গতকাল সকালে কারওয়ানবাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ১১টার মধ্যে সেখানকার খুচরা দোকানগুলোতে ফ্রেশ ও পুষ্টি ব্র্যান্ডের তেল পাওয়া যাচ্ছে। দোকানিরা জানান, সকাল থেকেই কোম্পনিগুলো থেকে তেল আসতে শুরু করে। সরবরাহকৃত তেলের মধ্যে ১ লিটার ও ৫ লিটারের তেলের বোতল রয়েছে। তবে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের সরবরাহ এখনো সেভাবে হয়নি।
কারওয়ানবাজারের বাবুল ট্রেডার্সের বিক্রেতা মনির হোসেন টিবিএসকে বলেন, সকালে ৫ লিটার ও ১ লিটারের তেল দিয়েছে কোম্পানি থেকে। যেগুলোতে সরকার নির্ধারিত নতুন মূল্য রয়েছে।
তবে ঢাকার বড় বাজারগুলোতে সরবরাহ থাকলেও পাড়া-মহল্লা সহ সব দোকানে এখনো পুরোদমে তেলের সরবরাহ হয়নি। অনেকে বেশি দামের কারণে এখনই তেল নিতেও চাচ্ছে না।
তবে তেলের বাজারে সরবরাহ মনিটরিং করতে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের আনাগোনা ছিল।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র এজিএম তাসলিম শাহরিয়ার টিবিএসকে বলেন, 'সকাল থেকেই আমরা সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে খানিকটা বেশি সরবরাহের প্রস্তুতি আমাদের ছিল।'
এদিকে টিবিএসের চট্টগ্রাম প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যে বলা হয়েছে, সেখানেও সয়াবিন সরবরাহ বেড়েছে। শনিবার সকাল থেকেই শহরের সব দোকানে তেল পাওয়া গেছে।
তবে চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ২৩২৮ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় ঐ ব্যবসায়ীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব তেল বাজারে বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়।
শনিবার (৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বাগানবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনের বাড়ি থেকে অবৈধভাবে মজুদ এসব ভোজ্যতেল উদ্ধার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলমগীর।
এস এম আলমগীর বলেন, ওই ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল অবৈধভাবে মজুদ করে রেখেছে বলে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ২ হাজার ৩২৮ লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে টিবিএসের বরিশাল প্রতিনিধি জানান, সেখানে এখনো সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে, সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এই সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও দুয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে দোকানিরা জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশে মূল্য সমন্বয়ের জন্য ভোজ্যতেলের রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে ঈদের আগে ঢাকা সহ সারাদেশের বাজারগুলো ভোজ্যতেলের সংকটে পড়ে। ঈদের পরপরই সরকার নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয়। যেখানে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ১৯৮ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৯৮৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৮০ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম ১৭২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এই নতুন দামে তেলের সরবরাহ শুরু হয় গতকাল থেকে।