কেউ আপনাদের অধিকার কাড়তে পারবে না : আসামের প্রতি মোদী
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য। আসামের নাগরিকদের শান্ত করতে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসামবাসীর উদ্দেশে টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘সিএবি নিয়ে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। কেউ আপনাদের অধিকার কাড়তে পারবে না।’
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে এ টুইট বার্তায় মোদী বলেন, ‘আসামের ভাই ও বোনদের আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, সিএবি পাস হওয়ায় তাদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। কেউ তাদের অধিকার, তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আর সুন্দর সংস্কৃতিকে কেড়ে নিতে পারবে না। আসাম তার নিজের মতো করেই এগিয়ে যাবে, ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।’
বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয়েছে সিএবি, এখন রাষ্ট্রপতির সইয়ের অপেক্ষা। এই বিলের বিরোধিতায় ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো। বুধবার দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ত্রিপুরা ও আসাম।
গত সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর থেকেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে তপ্ত হয়ে উঠছে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য।
সে পরিস্থিতি দেখে আসামের নাগরিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী টুইটে লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ও আমি আপনাদের রাজনৈতিক, ভাষাভিত্তিক, সাংস্কৃতিক এবং জমির অধিকার নিয়ে সাংবিধানিক নিরাপত্তা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
আসাম ও ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গুয়াহাটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, আসামের ১০ জেলায় বন্ধ করা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ। ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
এছাড়াও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ত্রিপুরা পুলিশ, ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস ও আসাম রাইফেলসও মোতায়েন করা হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার আধা সেনাকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে এয়ারলিফ্ট করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আসামও। জানা গেছে, কাশ্মীর থেকে দুই হাজার আধা সেনা উত্তর-পূর্বে পাঠানো হয়েছে।
কি আছে এই বিলে
নাগরিকত্ব সংশোধনী এই বিল অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে যে অমুসলিমরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, পার্সি, শিখ ও খ্রিস্টান) ধর্মীয় পীড়নের কারণে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার। তবে মুসলমানরা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন না।