গর্ভবতী নারীদের টিকা গ্রহণের অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি
গর্ভবতী নারীদের কোভিডের টিকা গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি। সন্তানসম্ভবা নারীদের উপর পরিচালিত এক বৃহদাকার গবেষণা থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায় যে, ফাইজার এবং মডার্নার টিকা গ্রহণের পর গর্ভবতী নারী এবং তাদের নবজাতক শিশুরা সুরক্ষিত আছে।
'নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন' সাময়িকীতে বুধবার পিয়ার রিভিউযুক্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। ৩৫ হাজার ৬৯১ জনের উপর পরিচালিত ঐ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি পাননি গবেষকরা। গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্যগুলো ১৬ থেকে ৫৪ বছর বয়সী অংশগ্রহণকারীরা নিজেরাই জানিয়েছিলেন।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে সিডিসি পরিচালক রোশেল ওয়ালেন্সকি জানান, "গর্ভধারণের তৃতীয় ত্রৈমাসিক বা থার্ড ট্রাইমেস্টার পর্যায়ে টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে কোনো সুরক্ষাজনিত উদ্বেগ পরিলক্ষিত হয়নি। আর তাই, সিডিসি গর্ভবতী নারীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে।"
গবেষণার তথ্যানুযায়ী অন্যান্য নারীদের তুলনায় গর্ভবতী নারীরা ভ্যাকসিন দেওয়ার পর টিকাদানের স্থানে ব্যথা অনুভূত হওয়ার অভিযোগ করেছেন বেশি। তবে, অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন: মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, ঠান্ডা ও জ্বর ইত্যাদি নিয়ে তাদের অভিযোগ কম ছিল।
৮২৭ জন অংশগ্রহণকারী তাদের গর্ভধারণের সময়কাল পূর্ণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে টিকা গ্রহণের পর গর্ভপাতের হার মহামারি পূর্ব সময়ে গর্ভপাতের হারের সমান ছিল বলে পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
তবে, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর মাত্র প্রথম ১১ সপ্তাহের হিসাব অর্থাৎ, ১৪ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টিকা গ্রহণকারীদের উপর গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত নারীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়াসহ উচ্চ মৃত্যুঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। আর তাই সিডিসির তথ্যানুযায়ী এই নারীদের টিকাদানের আওতায় আনার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তবে, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথম দিককার ভ্যাকসিন কার্যকরিতা এবং নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণায় গর্ভবতী নারীদের সম্পৃক্ত রাখেনি। সাম্প্রতিক অধিকাংশ গবেষণয় গর্ভবতী নারী ও তাদের শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
তবে, গবেষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, গর্ভবতী মা এবং নবজাতক শিশুর ওপর ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি জানতে গর্ভধারণের প্রথম পর্যায়ে টিকাগ্রহণকারী আরও বিপুল সংখ্যক নারীদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী এবং পর্যালোচনামূলক গবেষণা প্রয়োজন।