গ্রিসে ষাটোর্ধ্বদের জন্য করোনা টিকা বাধ্যতামূলক, অন্যথায় জরিমানা
করোনভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের টিকা নেওয়ার প্রতি অনিহার কারণে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দুটি দেশ নাগরিকদের আল্টিমেটাম দিয়েছে; 'করোনা টিকা নিন, নতুবা জরিমানা গুনুন'।
মঙ্গলবার গ্রিস সরকার ঘোষণা দিয়েছে, আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ ৬০ বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সী প্রত্যেককে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হবে। অন্যথায়, গুনতে হবে মাসিক ১০০ ইউরো (প্রায় ১১৪ ডলার) জরিমানা।
গতমাসের শুরুতে অস্ট্রিয়া সরকারও এমনি এক ঘোষণা দিয়েছিল; আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যাকে টিকা নিতে হবে। যারা প্রত্যাখ্যান করবেন জরিমানা হিসেবে তাদের দিতে হবে ৩ হাজার ৬০০ ইউরো।
এক টেলিভিশন বৈঠকে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস তার মন্ত্রিসভাকে বলেন, "এটি কোন শাস্তি নয়। আমি মনে করি, এটি সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি মূল্য। এটি টিকাপ্রাপ্তদের প্রতি ন্যায়বিচারমূলক একটি কাজ; কারণ অন্যদের টিকা নেওয়ার প্রতি অনিহার জন্য তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন না।"
ইইউভুক্ত দেশ হিসেবে গ্রিসই প্রথম, দেশের বয়স জনগোষ্ঠীকে কার্যকরভাবে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সরকারি তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মিৎসোটাকিস বলেন, "প্রায় ৮৩ শতাংশ বয়স্ক নাগরিকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি নয়।"
গ্রিসের ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর পাবলিক হেলথের তথ্য অনুসারে, শুধু মঙ্গলবারেই দেশটিতে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে; কয়েকশ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং 88 জন করোনা জটিলতায় মারা গেছেন।
করোনা ঠেকাতে বেশ কতোগুলো পদক্ষেপ ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে, গ্রিস ও অস্ট্রিয়া উভয়ই বাধ্যতামূলক টিকাদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। উভয় দেশেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস ও কর্তৃত্ববাদ বিরোধী নীতিতে ভর করে টিকা বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। অস্ট্রিয়ায় একজন টিকা বিরোধী ডানপন্থী রাজনীতিবিদ কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ঘোড়ার কৃমিনাশক ওষুধ 'আইভারমেকটিন' ব্যবহারের প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। তার দল হাজার হাজার মানুষ নিয়ে লকডাউন, করোনার বিধিনিষেধ ও টিকাদান কর্মসূচির বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছিল।
করোনার নতুন ধরন 'ওমিক্রন' ঠেকাতে ইউরোপের দেশগুলোতে আবারও নতুন করে করোনার বিধিনিষেধ জারি করছে দেশগুলোর সরকার। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ওমিক্রন খুবই উচ্চ সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ধরন। তবে, গবেষণায় এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। অস্ট্রিয়াসহ ইইউভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশে ইতোমধ্যে ওমিক্রন সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। মিৎসোটাকিস বলেছেন, "ধরনটি খুব শীঘ্রই গ্রিসে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।"
সূত্র: এনপিআর