তালেবানের খবর প্রকাশ না করতে কাশ্মীরের সংবাদপত্রগুলোকে নির্দেশ
কাশ্মীরের মুসলিমদের নিয়ে তাদের কথা বলার অধিকার রয়েছে বলে তালেবান দাবি করার পরেই নড়েচড়ে বসেছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তালেবান তথা আফগানিস্তানের ব্যাপারে কোনও কিছু লেখা চলবে না।
তালেবানের এমন বক্তব্য সামনে আসার আগে থেকেই অবশ্য জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছিল। ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি যখন দেশ ছাড়েন, কাশ্মীরের সংবাদপত্রগুলো সেই খবর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছিল। পরের দিনই তথ্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে পত্রিকার সম্পাদকদের ডেকে বলে দেওয়া হয়, তালেবান কিংবা আফগানিস্তান প্রসঙ্গে কোনও খবর যদি তারা প্রকাশ করেন, তা হলে সরকারি বিজ্ঞাপন মিলবে না।
স্থানীয় একটি উর্দু পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ''তথ্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আফগানিস্তান নিয়ে কোনও কিছু লেখা চলবে না।'' লিখলে সরকারি বিজ্ঞাপন মিলবে না— কাশ্মীরের পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। গতকাল কাশ্মীর নিয়ে তালেবানের বক্তব্য উপত্যকার কোনও কাগজে প্রকাশিত হয়নি।
হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির মৃত্যুর খবরও কাশ্মীরের কাগজগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি। সম্পাদকেরা জানাচ্ছেন, জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার মিডিয়া উপদেষ্টা এ নিয়ে বড় খবর না করার জন্যই তাদের বলেছিলেন। অঘোষিত এই সব নির্দেশের মধ্যে সংবাদপত্রগুলো তা হলে কী ছাপছে? কাশ্মীরের খবরের কাগজগুলোতে সবচেয়ে বেশি জায়গা মিলছে জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার। বছর বছর সংঘর্ষের মধ্যে খবর করে টিকে রয়েছে কাশ্মীরের সংবাদপত্রগুলো। সে দিকে নজর রাখা এক গবেষকের কথায়, ''মনোজ সিনহা যে প্রচার পাচ্ছেন, তা অভূতপূর্ব। মোদিও এমন পান না।''
পাশাপাশি, কাশ্মীরের খবর করার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন এসেছে। যেমন, এনকাউন্টারের প্রসঙ্গ এলে পুলিশের বক্তব্যই প্রকাশ করছে সংবাদপত্রগুলো। সেসবের সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলার মতো বিষয়গুলো জুড়ে যায়, তা নিয়ে খবর প্রকাশিত হয় না।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা