নতুন স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা হলো: সাবেক মার্কিন বাণিজ্য কর্মকর্তা
বৈশ্বিক নানা বিষয়েই দুই ক্ষমতাধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা করোনাভাইরাস মহামারিতে 'নতুন স্নায়ুযুদ্ধ' হিসেবে রূপ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউজের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ক্লেটে উইলেমস।
মঙ্গলবার মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, "বাস্তবতা এটাই যে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চাপা উত্তেজনা যথেষ্ট মাত্রায় বাড়ছে।"
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সাবেক এই উপপরিচালক বলেন, "আমি জানি আমার ব্যবহৃত এই টার্মটি নিয়ে লোকজন অস্বস্তিতে পড়বে তবে আমি মনে করি এক্ষেত্রে আমাদের সৎ হওয়া উচিত। যেখানে সে শব্দ ব্যবহার করতে হবে সেটাই করা উচিত। এটা একটা নতুন স্নায়ুযুদ্ধের শুরু এবং আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপ হবে।"
ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার বর্তমান দ্বন্দ্ব করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্টি হয়। এই ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ বিশ্বের ১৮৭টি দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন তিন মিলিয়ন মানুষ এবং প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই লাখেরও বেশি।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আগে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সেখানকার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচকরা বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, এই ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সঠিক তথ্য দেয়নি চীনা সরকার।
সপ্তাহখানেক আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন চীনের 'ভুলের' কারণেই বিশ্বব্যাপী এই মহামারি ছড়িয়েছে। একই সময়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেই বলেছেন, এই ভাইরাসটি চীনের উহানের ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়েছে বলে তাদের কাছে 'গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আছে'।
তবে বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযোগ উড়িয়ে দেয় চীন। বিপরীতে এর আগে তারা দাবি করেছিল মার্কিন সেনাবাহিনী উহানে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারে।
সোমবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে মাইক পম্পেইয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলা হয়, তার বক্তব্য 'সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন'। উল্টো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেই এর বিরুদ্ধে চীনা গনমাধ্যমটি অভিযোগ এনে বলে, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী নির্বাচনে ট্রাম্পকে পুনরায় জেতানোর জন্যই পম্পেই চীনের বিরুদ্ধে এমন দুর্নাম রটাচ্ছে।
ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, "মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে ট্রাম্প প্রশাসন নজিরবিহীন প্রোপাগাণ্ডা কৌশলে নিজেদের লিপ্ত করেছে।"
সেখানে আরও বলা হয়, "এখন তাদের একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচনে জয়ী হওয়া। চলমান মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াশিংটনের অযোগ্যতা যদি মার্কিন জনগণের মধ্যে ক্রোধ ও অসন্তোষ তৈরি করে তবে আগামী নভেম্বর মাসের নির্বাচনে ট্রাম্প প্রশাসন হারবে।"