২ ডোজ টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও বাড়িতে সংক্রমণ ছড়ান, প্রয়োজন দ্রুত টিকাদান
দুই ডোজ টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন বলে সতর্ক করেছে গবেষকরা।
দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিরাও ভ্যাকসিন না নেওয়া ব্যক্তির মতোই আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও তাদের উপসর্গ কম থাকে, বা উপসর্গ থাকেই না, কিন্তু নিজেরা আক্রান্ত হয়ে বাড়ির অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা ৩৮ শতাংশ।
বাড়ির বাকিরাও ভ্যাকসিন নিলে এ হার ২৫ শতাংশে নেমে আসে।
দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজের গবেষণায় আরও বেশি মানুষকে কেন ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত তা উঠে এসেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু ঠেকাতে ভ্যাকসিন অসাধারণ কার্যকারিতা দেখায়। তবে সে তুলনায় সংক্রমণ ঠেকাতে এর কার্যকারিতা কম।
ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সময়ের সঙ্গে এর কার্যকারিতার হারও কমে আসতে থাকে, ফলে বুস্টার ডোজ দেওয়ার অরয়োজন পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাসা-বাড়ি থেকেই সবচেয়ে বেশি কোভিড সংক্রমিত হওয়ার, বাড়ির যে সব সদস্য ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য উপযোগী, তাদের সবার ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া উচিত।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লন্ডন ও বোল্টনের ৪৪০টি বাড়ির ওপর এ গবেষণা চালানো হয়েছে।
গবেষণাটিতে দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও সে হারও কম নয়। ভ্যাকসিন না নেওয়া ব্যক্তিদের মতোই সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে তারা।
ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে যে সময় আক্রান্ত ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তা ভ্যাকসিন নেওয়া ও না নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রায় একইরকম।
যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ও গবেষণাটির গবেষক অজিত লালভানি বলেন,
"ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর কারণে, আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে বাকিদেরও ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া জরুরি। যেহেতু আসছে শীতে মানুষ বাড়ির ভেতর আরও কাছাকাছি বেশি সময় কাটাবে, এখন ভ্যাকসিন নেওয়া আরও বেশি জরুরি,"
"আমরা দেখেছি, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। একারণে দ্রুত বুস্টার ডোজও নেওয়া উচিত,"
গবেষণাটির সহ-গবেষক ড. আনিকা সিঙ্গানায়াগাম বলেন, "নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভবের মুখে টিকাদানের প্রভাব, বিশ্বজুড়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে কেন সংক্রমণ বাড়ছে ও কিছু নির্দিষ্ট দেশে কেন শনাক্তের হার বেশি- এসব বিষয় উঠে এসেছে আমাদের গবেষণায়, "
"মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও উপসর্গ দেখা দিলে টেস্ট করানো- এসব ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও কতোটা জরুরি তা আরেকবার এ ফলাফলে উঠে এসেছে," যোগ করেন তিনি।