‘আইডা’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ও টর্নেডো আইডার প্রকোপে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৫ জন মারা গেছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় 'ঐতিহাসিক বিনিয়োগ' প্রয়োজন হবে।
পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়েই পরিবেশগত নানা বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে এবং দেশটি এই বিপর্যয়কে 'জীবন-মৃত্যুর সঙ্কট' হিসেবে বিবেচনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
নিউইয়র্ক শহর এবং নিউ জার্সিতে তীব্র বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেসব অঞ্চলের অনেক বাসিন্দাই পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। চারটি অঙ্গরাজ্যে দুর্যোগের কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিউজার্সির গভর্নর ফিল মার্ফি জানিয়েছেন যে রাজ্যটিতে অন্তত ২৩ জন মারা গেছেন - যাদের অধিকাংশই পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার পর গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান।
নিউইয়র্ক শহরে অন্তত ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১ জন ভবনের বেজমেন্টে পানিবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন।
পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় তিনজন মারা গেছেন, কানেটিকাটে মারা গেছেন একজন।
এই হারে ঝড় হওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কতটা, তা এখনো পরিস্কার নয়; তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়লে তার আশেপাশের বাতাস উষ্ণতর হয়ে ওঠে এবং হারিকেন, সাইক্লোন ও টাইফুন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ এই ধরণের দুর্যোগের সাথে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কাও তৈরি হয়।
নিউইয়র্ক শহরের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও বলেছেন, "আমাদের মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছানো উচিত যে সবদিক থেকেই পরিস্থিতির অবনতি হবে।"
নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেছেন, "আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না যে রাত ৮টা ৫০ থেকে ৯টা ৫০ এর মধ্যে এভাবে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি হবে এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতের ধারায় নিউইয়র্কের রাস্তায় পানি উঠে আসবে।"
তীব্র জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টিপাতের ফলে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
নিউইয়র্কের সাবওয়ে স্টেশনগুলোতে পানি উঠে যাওয়ায় অনেক স্টেশন বন্ধ ছিল এবং কিছু অংশে সাবওয়ে চলাচলও বন্ধ ছিল।
কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে নিউইয়র্কের রাস্তায় গাড়ি ভেসে যাচ্ছে এবং গাড়ির ভেতর থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল।
কোনো কোনো জায়গায় বাস, ট্রেনের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকে থাকতে হয়েছে।
নিউইয়র্কের পুলিশ লোকজনকে রাস্তায় না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, নগরীর নানা প্রান্ত থেকে আসা সাহায্যের আবেদনে তাদের সাড়া দিতে হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় আইডা গত রোববার লুইজিয়ানায় আঘাত হানার পর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ধরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এই ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ৪ মাত্রার।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লুইজিয়ানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার ঘরবাড়িতে এখনো কোন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নিউ অরলিন্সে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি রয়েছে।