সাদ্দাম হোসেনের অস্ত্র গবেষণা প্রধান ১৫ বছর ব্রিটেনে বাস করছেন, কর্মরত শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিপুল সমরাস্ত্র ক্রয় করে শক্তিশালী এক সামরিক বাহিনী গড়েছিলেন ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। শুধু অস্ত্র ক্রয় করেই ক্ষান্ত হননি, মধ্যপ্রাচ্যে সাদ্দামের ইরাকই সম্ভবত প্রথম আঞ্চলিক শক্তি- যেখানে স্থানীয়ভাবে নানান সমরাস্ত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রচলিত অস্ত্রের সাথে সাথে জীবাণু ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতেও প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের (১৯৯১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি)আগে লিপ্ত ছিলেন ইরাকি বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা। ওই যুদ্ধে ইরাকের পরাজয়ের পর সমস্ত অপ্রচলিত গণবিধ্বংসী অস্ত্র জাতিসংঘের পরিদর্শকদের নজরদারিতে ধবংস করা হয়। তারপরও ২০০৩ সালে বিশ্ব জনমতের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইরাকে হামলা চালায় ইঙ্গ-মার্কিন জোট।
আগ্রাসী এই জোটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সহযোগী ছিল ব্রিটেন। অথচ সাদ্দাম হোসেনের একজন শীর্ষ অস্ত্র গবেষণা শাখার প্রধান সেই ব্রিটেনেই ১৫ বছর ধরে বাস করছেন, শীর্ষ এক ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়েও জ্যেষ্ঠ পদে যুক্ত আছেন ড.সালেহ আল-আতাবি নামের এই বিজ্ঞানী।
এই গবেষক ছিলেন সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টির একটি গ্রুপেরও নেতা। গ্রুপটির বিরুদ্ধে প্রচণ্ড নির্মমতা ও নির্যাতনের মতো মানবতা লঙ্ঘণের অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, গ্রুপটি নির্বিচারে ত্রাসের রাজত্ব জারি করেছিল।
৫০ বছর বয়সী পদার্থবিজ্ঞানী ড.সালেহের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ তিনি ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি- মিলিটারি প্রোডাকশন অর্গানাইজেশনে চাকরি করেছেন। এই সংস্থাটি নানান ধরনের বিস্ফোরকসহ একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেলের মতো আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদন করতো।
২০০৩ সালে ইঙ্গ-মার্কিন আগ্রাসনে সাদ্দাম সরকারের পতনের পর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ব্রিটেনে পালিয়ে আসেন তিনি।
এরপর তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন। সেখানে তিনি পদার্থবিজ্ঞান ও পরমাণু চুল্লি প্রযুক্তির রিসার্চ টেকনিশিয়ান হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
২০১৩ সালে মানবিক কারণে তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থানের অনুমতি দেয় ব্রিটিশ সরকার।
তবে ড. সালেহের ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আবেদন নাকচ করেছেন পৃথক মেয়াদে দায়িত্বরত দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে যখন ড. সালেহ ব্রিটিশ পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তখনই তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আদালত সূত্রে গণমাধ্যমের হাতে আসে।
- সূত্র: দ্য সান ইউকে