৩৬ ঘণ্টার কারফিউয়ের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ শ্রীলঙ্কায়
শ্রীলংকায় তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের পটভূমিতে চলমান সহিংস বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার; পাশাপাশি বন্ধ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতীত কাউকে রাস্তায়, পার্কে, ট্রেনে বা সমুদ্রতীরে যেতে নিষেধ করে একটি নোটিশ জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে।
শনিবার সন্ধ্যার পরপর কারফিউ শুরু হয়।
বন্ধ করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম।
হোয়াটসঅ্যাপও অচল রয়েছে; মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে যে, এই সিদ্ধান্ত টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশ অনুসারে গৃহীত হয়েছে।
দিন দুয়েক আগে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের আশেপাশে গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতার পর দেশটিতে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হলো; উদ্দেশ্য সহিংস প্রতিবাদ রোধ।
এর আগে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক বাহিনী তলব করেন।
এছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তিকে আটকের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করার পর বিগত ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।
দেখা দিয়েছে বড় ধরনের বিদ্যুৎ সঙ্কট। দিনের বেশিরভাগ সময়েই বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ থাকে না। জ্বালানি ছাড়াও খাদ্য এবং ওষুধপত্রের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের সামনে গত বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবেই শুরু হয়েছিল। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপসহ জলকামান ব্যবহার করলে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দেয়।
সেদিনের সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত দুই ডজন কর্মকর্তা আহত হন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা।
শুক্রবার ৫৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর মতে, পাঁচজন ফটো-সাংবাদিককে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
এসব দমন-পীড়ন সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে হওয়া বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
- সূত্র- বিবিসি