সংকটে নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী শ্রীলঙ্কায়
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করার পর বিগত ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির জেরে দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বী।
সংকট-বিধ্বস্ত দ্বীপরাষ্ট্রটির মানুষকে জ্বালানী, খাদ্য এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার পর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
এরপরও অনেককেই বাজার থেকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। হয় লোকজনের টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে, নয়তোবা দোকানের সামগ্রী।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। কলম্বোর একটি সুপারমার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, গম এবং চাল বিকোচ্ছে যথাক্রমে কেজিপ্রতি ২৫১ টাকা এবং ২১৭ টাকায়।
প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ২৭৪ টাকা, নারকেল তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৯৭১ টাকায়। একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকায়। এছাড়াও এক কেজি গুঁড়াদুধের প্যাকেটের দাম এখন ২১৭২ টাকা।
দ্বীপরাষ্ট্রটির খুচরা মুদ্রাস্ফীতি ফেব্রুয়ারিতে দাঁড়ায় ১৭.৫% এবং খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ২৫%-এর অধিক বেড়েছে, ফলে খাদ্যশস্য এবং ভোগ্যপণ্যের দাম অবিশ্বাস্যভাবে বেড়েছে।
ওষুধ এবং গুঁড়াদুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী কলম্বো সহ শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে লোকজন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।
তাছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময়েই থাকছে না বিদ্যুৎ। বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসে সরকারকে সবকিছুর জন্য দায়ী করছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার রাতে পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ব্যতীত মন্ত্রিসভার ২৬ জন সদস্যই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
রাজাপাকসে পরিবারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষুব্ধ অনেকের মতে, প্রেসিডেন্ট গদি না ছাড়লে মন্ত্রীদের এ পদত্যাগ কোনো অর্থ বহন করে না।
এর আগে আন্দোলনকারীদের সহিংস বিক্ষোভ রোধে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা এবং ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করেই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে কলম্বোর পথে নেমে আসেন শত শত বিক্ষোভকারী।
- সূত্র- ইন্ডিয়া টুডে