পুতিনের ফোনেই ইস্পাত কারখানায় হামলার পরিকল্পনা বাতিল করে কাদিরভ বাহিনী
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে রক্ষা পেয়েছে মারিউপোলের ইস্পাত কারখানা। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দক্ষিণ ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোল দখলের পর সেখানকার বিশাল আজভস্তাল ইস্পাত কারখানাটি গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিল রুশ বাহিনীর পক্ষে লড়াইরত চেচেন যোদ্ধারা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজেই চেচেন নেতা রমজান কাদিরভকে ফোন করে সংযত হওয়ার নির্দেশ দেন।
তবে ইস্পাত কারখানাটির ওপর রুশ বাহিনী আক্রমাণ না চালালেও সেখানে আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয় সেনা এবং অসামরিক নাগরিকদের বাইরে আসার কোনো পথ অবশিষ্ট নেই। একটি মাছিও যেনো ওই কারখানা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারে, এমন নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। ফলে অবরুদ্ধ কারখানায় আটকা পড়া মানুষগুলো পর্যান্ত অক্সিজেন, চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুমুখে ঢলে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এদিকে পশ্চিমা গণমাধ্যমের দাবি, পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও রুশ গোলাবর্ষণে ইস্পাত কারখানাটি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে অনেক আহত মানুষ রয়েছেন, যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরশহর মারিউপোলেকে অন্যতম টার্গেট বানিয়েছে রাশিয়া। শুরু থেকেই রুশ সেনারা এই শহরের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে আসছিল। শহরটি দখলের মাধ্যমে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া যাওয়ার পথ সুগম হল রাশিয়ার জন্য। মারিউপোলের দখল ধরে রাখতে বুধবার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত প্রাণপণ লড়েছে ইউক্রেনের সেনারাও। শেষ এক সপ্তাহ ধরে ওই ইস্পাত কারখানাকে ঘাঁটি বানিয়ে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত সেনারা। তবে শেষরক্ষা হয়নি তাদের। শহরের দখল নেওয়ার পর রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমার্পণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল, আত্মসমার্পণের মাধ্যমে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়েছিল তাদের। কিন্তু সেই আল্টিমেটাম মানেনি ইউক্রেনীয় বাহিনী। ফলস্বরূপ অবরুদ্ধ ওই ইস্পাত কারখানা থেকে তাদের বেরিয়ে আসার পথ বন্ধের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বন্দর শহর মারিউপোল দখলের জন্য রাশিয়াকে সহায়তা করেছে পুতিনের ঘনিষ্ট মিত্র ককেশাসের চেচেন নেতা রমজান কাদিরভের মিলিশিয়া বাহিনীর। শেষ পর্যন্ত সংখ্যা এবং সমর সম্ভারে এগিয়ে থাকা রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় মারিউপোলে মোতায়েন ইউক্রেনীয় সেনারা।
- সূত্র: রয়টার্স