মর্টার হামলায় ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রথম নারী সৈনিক নিহত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরম্ভের পর থেকে এই প্রথম নিজেদের কোনো নারী সৈনিককে হারালো রাশিয়া। মারিউপোলের লড়াইয়ে মর্টারের গোলায় নিহত হন ভ্যালেন্তিনা গ্যালাটোভা নামের ওই নারী। তিনি রাশিয়ার ফ্রন্টলাইনে একজন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত মাসে কৃষ্ণ সাগর উপকূলের বন্দর নগরীতে নিহত হন ২৭ বছর বয়সী ভ্যালেন্তিনা। যদিও রাশিয়ান গণমাধ্যম তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বুধবার (৪ মে)।
এক সন্তানের জননী ভ্যালেন্তিনা গ্যালাটোভার জন্ম সাইবেরিয়াতে। তরুণ বয়সে তিনি ইউক্রেনের খারকিভ শহরের ১৭০ মাইল উত্তর-পশ্চিমের শহর ভরোনেঝ-এ চলে আসেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বশেষ আগ্রাসনের সময় তিনি স্বামীসহ দোনেৎস্ক এর মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় চলে আসেন। এখানেই তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। ভ্যালেন্তিনার ছেলের বয়স এখন ৮ বছর।
দোনেৎস্কে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে চলতি বছরের জানুয়ারিতেই স্নাতক শেষ করেছিলেন ভ্যালেন্তিনা।
ভ্যালেন্তিনা গ্যালাটোভার স্বামী দোনেস্ক পিপল'স রিপাবলিক (ডিপিআর)-এর সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং গত বছর ইউক্রেনের সাথে সীমান্ত সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্বিতীয়বারের মতো ইউক্রেন আক্রমণের পর ডিপিআর সশস্ত্র বাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নাম লেখান ভ্যালেন্তিনা। রাশিয়া ফ্রন্টলাইনে সশস্ত্র যোদ্ধা হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করায় ফ্রন্টলাইন চিকিৎসক হিসেবে ইউক্রেনে পাঠানো হয় ভ্যালেন্তিনাকে।
রাশিয়া দুই মাস যাবত মারিউপোল দখল করে রাখার প্রায় পুরো সময়টাই রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে ছিলেন ভ্যালেন্তিনা। তার নিজ শহর ভরোনেঝ-এর রুশ গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত ১৪ এপ্রিল রুশ বাহিনী একটি 'যুদ্ধ মিশন' পরিচালনার সময় মর্টারের গোলায় নিহত হন ভ্যালেন্তিনা।
মা-বাবা দুজনকেই যুদ্ধে হারিয়ে এতিম হয়ে যাওয়া ভ্যালেন্তিনার সন্তানকে এখন ভরোনেঝ-এ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে দাদির কাছে লালন-পালনের জন্য রাখা হবে তাকে।
সূত্র: ডেইলি মেইল