আরবদের উড়ুক্কু জুতো
শুরুটা জর্জ ডব্লিউ বুশকে লক্ষ্য করে এক ইরাকির জুতো ছুড়ে মারার মাধ্যমে। ২০০৮-এর ১৪ ডিসেম্বরের ঘটনা সেটা। বাগদাদে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরাকি সাংবাদিক মুনতাধার আল-জাইদি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিশানা করে জুতো ছুড়ে মারার সময় চেঁচিয়ে বলেছিলেন, 'ইরাকের জনগণের পক্ষ থেকে এটা তোমার জন্য বিদায়ী চুম্বন, কুত্তার বাচ্চা।' বুশ অবশ্য দুটো জুতো থেকেই শরীর বাঁচাতে পেরেছিলেন।
অনেকগুলো রূপক রয়েছে এ ঘটনায়। সদ্যই স্বাধীনতার স্বাদ উপহার দেওয়া ইরাকি জনগণের বিদায়ী চুম্বনের হাত থেকে বুশ কেন বাঁচার চেষ্টা করবেন? অথবা তাঁকে কুত্তা বলে ডাকলে অসুবিধাই-বা কী? মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনে এ রকম প্রশ্ন আনাগোনা করে।
তারপর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে কায়রোতে, ২০১৩-এর ফেব্রুয়ারিতে। এবার মাহমুদ আহমাদিনেজাদকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন এক সিরিয়ান। সিরিয়া সরকারকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষোভে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে জুতো মারেন ওই ব্যক্তি।
এ দুই ঘটনার পর নৃবিজ্ঞানীরা পশ্চিমা বিশ্বকে জুতো ছুড়ে মারার তাৎপর্য বোঝাতে লেগে পড়েন। তাঁরা ব্যাখ্যা করেন, আরব সংস্কৃতিতে মানুষকে জুতোর সোল দেখানোকেই অত্যন্ত অপমানজনক বলে গণ্য করা হয়। আর সেখানে জুতো ছুড়ে মারাটা তো আরও জঘন্য রকমের অপমান।
বিবিসির খবরে বলা হয়, জুতো ছুড়ে মারাটা অত্যন্ত জঘন্য রকমের অপমান। কারণ, মুসলিম সংস্কৃতিতে জুতোকে নোংরা জিনিস মনে করা হয়। জুতো হয় বাইরে রেখে মসজিদে ঢুকতে হয়, নয়তো (বাঁ) হাতে নিয়ে। কিন্তু জুতো পায়ে কোনো অবস্থাতেই মসজিদে প্রবেশ করা যায় না।
আরব ও মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে এমন 'চমৎকার' ও 'সূক্ষ্ম' অন্তর্দৃষ্টিদানের জন্য উত্তর আমেরিকান ও পশ্চিম ইউরোপিয়ান নৃবিজ্ঞানীরা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তাঁদের ব্যাখ্যা ছাড়া ইউরোপিয়ান ও আমেরিকানরা এই জুতোকাণ্ডের ব্যাপারে অলোকদৃষ্টি লাভ করত কি করে?
আফগানিস্তান ও ইরাক শাসনের জন্য মার্কিন সেনারা যে নৃবিজ্ঞানীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য ব্যগ্র হয়েছিল, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধক্ষেত্রে 'মাইন-প্রতিরোধী' সাঁজোয়াযানের সঙ্গে একদল গবেষকও পাঠিয়েছিল আমেরিকা। হিউম্যান টেরেইন সিস্টেম (এইচটিএস) নামক প্রোগ্রামের আওতায় তাদের কাজ ছিল এ দুই দেশের বিভিন্ন গোষ্ঠী নিয়ে গবেষণা করা। এইচটিএস মূলত নৃবিজ্ঞানীদের সহযোগিতার ওপরই নির্ভরশীল ছিল।
এইচটিএস প্রোগ্রামে ছিলেন রাফায়েল প্যাটাই নামের এক সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববিদ। তাঁর লেখা দ্য আরব মাইন্ড (১৯৭৩) বইটি পশ্চিমে ব্যাপক জনপ্রিয়। ইরাক আক্রমণের সময় এটি মার্কিন সেনাবাহিনীর বিশ্বস্ত হ্যান্ডবুক হয়ে ওঠে। এ বই পড়ে মার্কিন সেনারা ইরাক ও ইরাকিদের সম্পর্কে ধারণা নিত। বইটি আমেরিকার সামরিক মহলে এতই জনপ্রিয় যে ফোর্ট ব্র্যাগের জেএফকে স্পেশাল ওয়ারফেয়ার কলেজে অফিসাররা একে পাঠ্যবই হিসেবে ব্যবহার করেন।
এই 'মাস্টারপিস' না পড়লে মার্কিন সেনারা কখনো জানতেই পারত না যে আরব ও মুসলিম পুরুষেরা বংশপরম্পরায়ই কুড়ের বাদশা, কামের নেশায় প্রায়োন্মাদ এবং প্রত্যেক মুসলিমের কমপক্ষে চারটা করে স্ত্রী ও এন্তার যৌনদাসী উপপত্নী আছে।
এই 'মহামূল্যবান' তথ্যগুলো পরবর্তী সময়ে আবু গারিবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাজে লাগান মার্কিন সেনারা। আমেরিকান জীবন রক্ষার জন্য দারুণ উপকারে এসেছে দ্য আরব মাইন্ড। এ বই এক দারুণ শিল্পকর্ম। এই শিল্পকর্মকে তুলনা করা যায় ক্যাথরিন বিগেলোর জিরো টু ডার্ক থার্টি সিনেমার সঙ্গে।
পশ্চিমের 'মানবিক' সামরিক অভিযান
বিশ্বজুড়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর 'মানবিক' অভিযান মসৃণভাবে চালানো ও বিদেশি ভূমি দখলের জন্যই যে কেবল এ ধরনের নৃতাত্ত্বিক অন্তর্দৃষ্টি জরুরি, তা নয়। আমেরিকার এসব কাজকর্ম জায়েজ করার জন্য মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোরও এসব তথ্য খুব কাজে লাগে। এসব তথ্যের সাহায্যে তারা নিউইয়র্ক, শিকাগো, ওয়াশিংটন ডিসিতে বসে মার্কিন বাহিনীর মানবিক সামরিক অভিযানগুলোর পক্ষে সাফাই গায়। বুশকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে মারার ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের জ্ঞানের ঝুলি ভারী করে।
বুশকে অপমান করার জন্য জুতো ছুড়ে মারাটাকে মার্কিন জনগণের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকে। কারণ, পশ্চিমে, এই যেমন ধরুন নিউইয়র্কে, কাউকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে মারাটা প্রশংসা ও সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক। এখানে মার্কিনরা রাস্তায় পরিচিত বন্ধুবান্ধব বা শুভাকাক্সক্ষীকে থামিয়ে জুতোর সোল দেখিয়ে ভালোবাসা প্রদর্শন করে।
এডওয়ার্ড সাঈদ এ কারণেই চেয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন আমেরিকান স্টাডিজ বিভাগ খোলা হয়। আরব ও মুসলিমরা যাতে জানতে পারে আমেরিকান, কানাডিয়ান, ইসরায়েলি, ব্রিটিশরা জুতোকে কতটা সম্মানের চোখে দেখে।
নিউইয়র্কে জুতো ছুড়ে মারা শুধু সম্মান ও শ্রদ্ধার প্রতীকই নয়। একটা সুদৃশ্য, অভিজাত, গন্ধযুক্ত জুতো ছুড়ে মারার মতো সামান্য ঘটনা থেকে যে কত প্রেমের সম্পর্কের সূচনা হয়েছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এ কারণে কিছু উদ্যমী উদ্যোক্তা সুস্বাদু চকলেট দিয়ে জুতো বানানোর ব্যবসা শুরু করেছেন।
জুতোর প্রতি আমেরিকানদের ভালোবাসার বাড়াবাড়ি মাঝে মাঝে এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে একে রীতিমতো 'জুতো ফেটিশ'ই বলা চলে। যেমন সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটির এক পর্বে আমরা দেখি, জুতো বিক্রেতা বাস্টার শার্লটকে ক্রমাগত জুতোর দামের ওপর ছাড় দিয়েই যাচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই- শার্লটের জুতো পরার দৃশ্য দেখে আনন্দলাভ।
কিন্তু এই পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে আরও কাজ হওয়া প্রয়োজন। আমেরিকার প্রশিক্ষণ পাওয়া অনেক নৃবিজ্ঞানী তাঁদের গুরু রাফায়েল প্যাটাইয়ের বই থেকে তথ্য নিয়ে ইরানি ও ইরাকি নারী এবং তাদের পোশাক, এমনকি তাদের যৌন অভ্যাস নিয়েও গবেষণা করে ফেলেছেন। এবং বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বিভাগ থেকে বইও প্রকাশ করেছেন এসব বিষয়ের ওপর। এসব বই বেশ বাহবাও কুড়িয়েছে।
নৃবিজ্ঞানের এই ধারার একটা 'মাস্টারপিস' বই প্যাশনেট আপরাইজিংস: ইরান'স সেক্সুয়াল রেভল্যুশন। বইটার মূল কথা হলো, ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে গ্রিন মুভমেন্ট শুরু করার আগে দেশটির নারীরা যথেচ্ছ যৌনাচারে লিপ্ত ছিলেন। নৃবিজ্ঞানী না হলেও ইতিহাসবিদ হওয়ার জোরে বার্নার্ড লুইস আরবদের যৌন-হতাশা ও আরব বসন্তের উত্থান নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
আরব বসন্ত নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, 'আরেকটা ব্যাপার হলো এর যৌন দিক। আমাদের মনে রাখতে হবে, মুসলিম বিশ্বে সাধারণ, অর্থাৎ পশ্চিমা স্টাইলের যৌনতার অস্তিত্ব নেই। কোনো যুবক যদি সেক্স করতে চায়, তাহলে মাত্র দুটো উপায় আছে- বিয়ে করা অথবা পতিতালয়ে যাওয়া। বিশালসংখ্যক যুবক বেড়ে উঠছে টাকা-পয়সা ছাড়া- পতিতালয়ে যাওয়ার কিংবা বিয়ে করার, কোনোটার জন্যই টাকা নেই তাদের। এটা (তাদের মধ্যে) জন্ম দেয় তীব্র হতাশা।'
এই 'অসাধারণ' অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন পর্যবেক্ষণে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য। লুইসের এই মন্তব্য পড়ে প্রাচ্যের লোকেরা অবাক হয়ে ভাবেন, আমাদের প্রাচ্যের কোনো প-িত কেন পশ্চিমা দুনিয়ার অক্যুপাই ওয়াল স্ট্রিট মুভমেন্ট কিংবা ইউরোজোন সংকটে যুবক, যুবতী ও যৌনতার প্রভাব নিয়ে এমন আলোকদৃষ্টিসম্পন্ন মন্তব্য করেন না? করলে তো আমরাও পশ্চিমাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারতাম। আমেরিকার নৃবিজ্ঞানের স্নাতক শিক্ষার্থীরা যেমন পিএইচডি করতে মুসলিম ও আরব বিশ্বে গিয়ে 'প্রভূত জ্ঞান' নিয়ে দেশে ফেরে, তেমনি মুসলিম ও আরব বিশ্বের শিক্ষার্থীদেরও উত্তর আমেরিকায় পিএইচডি করতে যাওয়া উচিত। উচিত মার্কিন আদবকেতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। আমেরিকান জুতো সংস্কৃতি ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য জিনিস (বুট, মোজা, অন্তর্বাস, জিন্স, টি-শার্ট, চিউয়িং গাম) সম্পর্কে গবেষণা নিবন্ধ লেখা উচিত।
অনারব দেশগুলোর তরুণ নৃবিজ্ঞানীদের এখন এই ক্ষেত্রে গবেষণায় আসা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, বিবিসির এ প্রতিবেদন অনুসারে, 'ইউরোপিয়ান ট্রেড কমিশনার পিটার ম্যান্ডেলসন বলেছেন, চীন ও ভিয়েতনাম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে জুতো "খালাস করছে"।'
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, জুতো 'খালাস করছে'। ইউরোপকে ভাগাড় বানিয়েছে। কল্পনা করতে পারেন? এ কেমন অভব্যতা? তরুণ নৃবিজ্ঞানীদের উচিত চীন-ভিয়েতনামের এহেন কাজের কার্যকারণ অনুসন্ধান করা।
কখনো কখনো একটা জুতো স্রেফ জুতোই না, স্যার!
উত্তর আমেরিকা বা ইউরোপের জুতো ছোড়ার ও এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রেম-ভালোবাসার সংস্কৃতি নিয়ে নৃতাত্ত্বিক কাজ হওয়া জরুরি। কারণ, গবেষণা না হলে প্রাচ্যে ইউরোপ-আমেরিকার জুতো ছোড়ার সংস্কৃতির ভুল ব্যাখ্যা করা হতে পারে। ফ্রয়েড বলেছিলেন, মাঝেমধ্যে একটা সিগার স্রেফ একটা সিগারই- কিন্তু আমেরিকায় তা নয়। যে দেশে নোংরা, গন্ধযুক্ত জুতো ছুড়ে মারা সম্মান ও প্রশংসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত, সেই দেশে ফ্রয়েডের এ কথা খাটে না। এ দেশে নিউইয়র্কের মতো নগরীগুলোতে মানুষ কুকুর নিয়ে ভ্রমণে বের হয়। রাস্তার পাশের পেভমেন্ট ভর্তি থাকে পশুর বিষ্ঠায়। এই বিষ্ঠা মানুষের জুতোয় মাখামাখি হয়ে তাদের বন্ধু, স্বজন ও প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে পৌঁছে যায়। এসব বিষ্ঠা মাখানো জুতো ছুড়ে মেরে আমেরিকানরা প্রিয়জনদের ভালোবাসা ও সম্মান দেখায়।
শুধু আরবরাই নয়, পশ্চিমে জুতো নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির শিকার হয়েছে পারস্যবাসীরাও। ষোড়শ শতকে, সাফাভি যুগে পারস্যের অশ্বারোহী সৈন্যরা হাই হিল জুতো পরত। ঘোড়ার পিঠে বসতে সুবিধা হতো বলে হাই হিল পরত তারা। কিন্তু সাফাভি সৈনিকেরা ইউরোপে আসার পর তাদের অনুকরণে ইউরোপের অভিজাত সম্প্রদায়ও হাই হিল পরতে শুরু করে। অভিজাত সম্প্রদায়কে দেখে ইউরোপের দলে দলে হাই হিল পরতে আরম্ভ করে নারীরা। এভাবেই নারীদের কল্যাণে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে হাই হিল।
পাঠক, দেখলেন তো, যে জুতো সাফাভি সৈন্যরা পরত ঘোড়ার পিঠে ভারসাম্য বজায় রেখে বসার সুবিধার জন্য, সেই জুতো কীভাবে ভুল-বোঝাবুঝির শিকার হয়ে ঠাঁই করে নিল ইউরোপের অভিজাত সম্প্রদায় ও নারীদের মণিকোঠায়। কালের বিবর্তনে ইউরোপ-আমেরিকায় হাই হিলের এখন রমরমা, অথচ মাতৃভূমিতে জুতোটি পড়ে গেছে অস্তিত্বের সংকটে।
উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের বিমানবন্দরে জুতো খোলার সময় লক্ষ করবেন, আমেরিকান ও ইউরোপীয়রা কী প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে একজন আরেকজনের জুতোর দিকে। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত আরব, ইরানি, ভারতীয়, চীনাদেরও। জুতোকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করা উচিত তাদের।
জুতোর মর্যাদা বুঝতে পারেননি বলেই জুতোবোমা মেরে উড়িয়ে দিতে একটা ফ্লাইট উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন 'শু-বম্বার' রিচার্ড রিড। ভাগ্যিস, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সফল হলে জুতোর ভারি দুর্নাম হয়ে যেত। তবে রিডের কারণে জুতো নিয়ে গোটা দুনিয়ার বিমানবন্দরগুলোতে বেশ একটা হইচই পড়েছিল। রিচার্ড রিডের বাবা জ্যামাইকান, মা ইংরেজ। তাঁকে যদি নৃবিজ্ঞানীরা মুসলিম জুতো আর জুডিও-খ্রিষ্টান জুতোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পার্থক্য বুঝিয়ে দিতেন, তাহলে তিনি নিশ্চয়ই এই সৃষ্টিছাড়া কাণ্ড করতে যেতেন না।
দেখতেই পাচ্ছেন, প্রাচ্যের লোকেরা উত্তর আমেরিকায় দশকের পর দশক ধরে বাস করেও সেখানকার জুতো ভাগাভাগির সংস্কৃতিটা এখনো ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায় আরব, ইরানি, আফ্রিকান, এশিয়ান ও ল্যাটিন আমেরিকান নৃবিজ্ঞানীদের। উত্তর আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান নৃবিজ্ঞানীরা যেভাবে অন্যদের নিয়ে গবেষণা করে তাদের বুঝতে পেরেছেন, অন্যরা উত্তর আমেরিকান-ইউরোপীয়দের নিয়ে সেভাবে গবেষণা করতে পারেননি। অথচ আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান নৃবিজ্ঞানীরা প্রাচ্যের মানুষকে নিয়ে নিবিড় গবেষণা করেছেন। মার্কিন-ইউরোপীয় গবেষকদের কারণেই প্রাচ্যের মানুষ নিজেদের আলসেমি, চার স্ত্রী ও হারেমভর্তি উপপত্নী রাখার এবং জুতো ছোড়ার বিশ্রী সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
-
সূত্র: আল-জাজিরা