এপ্রিলে পাকিস্তান সফর হচ্ছে না বাংলাদেশের!
অনেক দেন-দরবারের পর চূড়ান্ত হয়েছিল বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর। দুই দফায় পাকিস্তানে দুটি টি-টোয়েন্টি ও একটি টেস্ট খেলে এসেছে বাংলাদেশ। শেষ দফায় আগামী এপ্রিলে একমাত্র ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে পাকিস্তান যাওয়ার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু তৃতীয় দফার এই সফরটি আপাতত হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি বিশ্বস্ত সূত্র এমন খবরই দিয়েছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে। সূত্রটি জানিয়েছে, এই দফার সফরটি আগামী এপ্রিলে না হলেও বাতিল হচ্ছে না। দুই বোর্ড আলোচনা করে পরবর্তী সময়ে সূচি নির্ধারণ করবে।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সতর্কতায় তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফর না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বিসিবি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এরআগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে সফর না করার সিদ্ধান্ত জানাবে বিসিবি। ইতোমধ্যে পিসিবির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে বিসিবি। মহামারি আকার ধারণ করায় এবার পিসিবিও সেভাবে জোর করছে না বলে জানিয়েছে বিসিবির সূত্রটি। তবে পিসিবির কী সিদ্ধান্ত, সেটাও জানতে চায় বিসিবি।
এই মুহূর্তে পাকিস্তান সফর না করতে বাংলাদেশ সরকার থেকেও একটা নির্দেশনা বিসিবিকে ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। তবে এটাই চূড়ান্ত নয়। দুই-একদিনের মধ্যে সরকার থেকে চূড়ান্ত নির্দেশনা দেওয়া হবে হবে বলে জানা গেছে। এরপরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
তৃতীয় দফায় একমাত্র ওয়ানডে ও একটি টেস্ট করাচিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু করাচিতে করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। পাকিস্তানে সব মিলিয়ে ২০জন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯জন আছেন করাচিতে।
পাকিস্তানে যখন পাঁচজন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়, তখন থেকেই তৃতীয় দফার সফর নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে বিসিবি। ওই সময় করাচিতে দুইজন করোনা আক্রান্ত রোগী ছিলেন। করোনা ভাইরাস সতর্কতায় ২ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত করাচির সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় করাচির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যাত্রীদের পরীক্ষা করে তারপর ছাড়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় করাচিতে যাওয়ার মতো ঝুঁকি কোনোভাবেই নিতে চায় না বিসিবি।
এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনই কিছু বলছে না বিসিবি। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, 'এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। আমরা আইপিএলের বিষয়টার দিকে খেয়াল রাখছি। তবে আইপিএলের ওপর এটা নির্ভর নয়। বিশ্বব্যাপী বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে। অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা নিবিড়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। পর্যবেক্ষণ শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে স্থবিরতা নেমে আসার মতো অবস্থা হয়ে পড়েছে। সব জায়গার খেলাধুলা স্থগিত ঘোষণা করা হচ্ছে। ইতিলিয়ান লিগ সিরি এ'র খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ক্রিকেটেও পড়েছে প্রভাব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের মধ্যকার দুটি টি-টোয়েন্টি ইতোমধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও টিকেট বিক্রি সীমিত করেছিল বিসিবি।
করোনা সতর্কতায় ভারতের জমজমাট টি-টোয়েন্টি আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) স্থগিত করার চিন্তা করছে বিসিসিআই। বাতিল না করা হলেও পিছিয়ে যেতে পারে আইপিএলের এবারের আসর।
অন্যান্য দেশের মতো করোনা ভাইরাস সতর্কতায় ভিসা দেওয়ায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। ১৩ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার।
আগের সূচি অনুযায়ী ৩ এপ্রিল করাচিতে একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিসিবির অনুরোধে দুইদিন এগিয়ে ১ এপ্রিল নিয়ে আসা হয়েছে ওয়ানডে ম্যাচটি। করাচিতেই ৫ এপ্রিল টেস্ট ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা।