দুঃস্বপ্নের শুরুর পরও প্রথম দিন শেষে স্বস্তি
যেভাবে শুরু হয়েছিল, দিনশেষে হায় হায় রোল পড়তে পারতো। ১৩২ রানের মধ্যেই ৬ জন ব্যাটসম্যান ফিরে যান। অনেকে হয়তো ২০০-এর আশেপাশেই বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের শেষ দেখতে পাচ্ছিলেন। সেখান থেকে দলকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন লিটন কুমার দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের জুটির কারণেই হারারে টেস্টের প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৯৪ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে। ৩০০ ছাড়িয়ে প্রথম দিনটা শেষ করতে পারতো মুমিনুল হকের দল। কিন্তু আলোক স্বল্পতার কারণে ৭ ওভার বাকি থাকতেই মাঠ ছাড়ে দুই দল।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির বোলিং তোপে পড়তে হয় বাংলাদেশকে। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ ওপেনার সাইফ হাসানের স্টাম্প উপড়ে নেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকেও সাজঘর দেখিয়ে দেন জিম্বাবুয়ের ডানহাতি এই পেসার।
৮ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান সাদমান ইসলাম অনিক ও অধিনায়ক মুমিনুল হক। তৃতীয় উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। ২৩ রান করা সাদমানের বিদায়ে আবারও এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। উইকেটে থিতু হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান।
১১ রান করা মুশফিককে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন মুজারাবানি। জিম্বাবুয়ে পেসারের একটি ডেলিভারি ছাড়তে গিয়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন মুশফিক। যদিও তার আউট নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। টিভি রিপ্লেতে মনে হয়েছে, ডেলিভারিটি স্টাম্প মিস করবে। কিন্তু ডিআরএস না থাকায় বাঁচার সুযোগ পাননি মুশফিক।
পরের ওভারে আরও বড় ধাক্কা খেতে হয় বাংলাদেশকে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি হয়ে থাকা সাকিব ৩ রান করেই বিদায় নেন। ভিক্টর নিয়াউচির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। দুইবার জীবন ফিরে পাওয়া মুমিনুল হকও কিছুক্ষণ পর সাজঘরে ফেরেন। বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক ৯২ বলে ১৩টি চারে ৭০ রান করেন।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গেছেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সপ্তম উইকেটে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে পুল শট খেলতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ১৪৭ বলে ১৩টি চারে ৯৫ রান করেন তিনি। টেস্টে এটাই তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
লিটনের বিদায়ের পরের বলেই আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর তাসকিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকিটা সময় পার করেন ১৬ মাস পর টেস্ট খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার ৫৪ রানে এবং তাসকিন ১৩ রানে অপরাজিত আছেন। জিম্বাবুয়ের মুজারাবানি ৩টি, ডোনাল্ড টিরিপানো ও ভিক্টর নিয়াউচি ২টি এবং রিচার্ড এনগারাভা একটি উইকেট পান।