নিজেদের পারফরম্যান্সে দুয়ার খুলবে সতীর্থদের, আশা সালমা-জাহানারার
গত আসরে সংখ্যাটা ছিল এক, এবার দুই। আগামী আসরে সংখ্যাটা চার-পাঁচ হয়ে যাবে বলে আশা তাদের। এ পথে আয়োজকদের বিশ্বাস অর্জনে ব্যাটে-বলে আলো ছড়াতে চান উইমেন্স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের দুই তারকা ক্রিকেটার জাহানারা আলম ও সালমা খাতুন।
আগামী ৪ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে মেয়েদের আইপিএল খ্যাত এই টুর্নামেন্টটি। গতবারের মতো এবারও ভেলোসিটির হয়ে খেলবেন পেসার জাহানারা। প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সালমা খেলবেন ট্রেইলব্লেজার্সের হয়ে।
দারুণ কিছুর আশায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের এই দুই ক্রিকেটার। মঙ্গলবার বিসিবির একাডেমি মাঠে অনুশীলন করেছেন তারা। ১৩ অক্টোবর প্রথম করোনা পরীক্ষা হবে জাহানারা-সালমার। দ্বিতীয় টেস্ট ১৯ অক্টোবর। পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে আগামী ২১ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিমানে চড়বেন দুজন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জাহানারা বলেন, 'আমাদের প্রথম করোনা পরীক্ষা কাল, ১৩ অক্টোবর। আরেকটা পরীক্ষা হবে ১৯ অক্টোবর। এই দুই পরীক্ষায় নেগেটিভ এলে রওনা করব। আগামী ২১ তারিখ আমি ও সালমা আপু এক সাথেই রওনা দেব।'
বাংলদেশ থেকে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়ছে দেখে উচ্ছ্বসিত জাহানারা। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে বিশ্বাস অভিজ্ঞ এই পেসারের। জাহানারা বলেন, 'এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে বাংলাদেশ থেকে আরও একজন সুযোগ পেয়েছে। গত আসরে বলেছিলাম, আমি চেষ্টা করব ভালো খেলার, যেন আয়োজকরা চিন্তা করে বাংলাদেশের আরও ভালো খেলোয়াড় আছে।'
সতীর্থদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে এবারও নিজের সেরাটা দিতে চান জাহানারা, 'গতবারই আমি ভাবছিলাম, বাংলাদেশ থেকে যদি কয়েকজন সুযোগ পায়, তাহলে সেটা খুবই ভালো হবে। এবার আমরা দুজন হলাম, এ নিয়ে আমি খুবই খুশি। পরের বছর সংখ্যাটা বাড়লে আমি আরও খুশি হব। আমাদের আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে। আমরা ভালো করতে পারলে অন্যদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে।'
দীর্ঘদিনের সতীর্থ সালমা একই আসরে অংশ নিলেও তার সাথে সময় কাটানোর তেমন সুযোগ হবে না বলে জানালেন জাহানারা। তিনি বলেন, 'আমি এক দলে, সালমা আপু অন্য দলে। কথা বলা বা গল্প করার মতো সুযোগ হবে না। গিয়ে ছয় দিনের কোয়ারেন্টিন, তিনটা পরীক্ষা হবে। সবার অনুশীলনের আলাদা সময়, টিম মিটিংসহ আরও অনেক কিছু। যা কথা বলার ফোনেই হবে। এক হোটেলে থাকলেও সেভাবে আড্ডার সময় থাকবে না। যাওয়া আর আসাটা এক সাথে, এই আর কি।'
লকডাউন চলাকালীন গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সালমা খাতুন। ফিটনেসের বাইরে সেভাবে অনুশীলন করা হয়নি তার। মঙ্গলবার মিরপুরে অনুশীলন করে স্বস্তির নিশ্বাসই ফেলেছেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার আগে এই কদিনে নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করাই এখন তার একমাত্র লক্ষ্য।
সালমা খাতুন বলেন, 'অনেক ভালো লাগছে। অনেকদিন পরে ঢাকা এসেছি, এসে আজ অনুশীলন করলাম। আজ বেশ ভালো অনুশীলন হয়েছে আমার আর জাহানারার। সামনে যে কদিন আছে, চেষ্টা করব ভালো করে প্রস্তুতি নিতে। আপাতত এতোটুকুই লক্ষ্য।'
বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়বে, জাহানারার মতো এমন বিশ্বাস সালমারও, 'আমি প্রত্যাশা রাখি বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটারের সংখ্যা অবশ্যই বাড়বে। আমাদের দলে এমন ক্রিকেটার আছে। গতবার জাহানারা ছিল, এবার আমি যাচ্ছি। আমাদের ক্রিকেট যেভাবে এগোচ্ছে, ভবিষ্যতে আমাদের দেশের আরও কয়েকজন সুযোগ পাবে। এ জন্য আমাদের পারফরম্যান্স বড় ভূমিকা রাখতে পারে। চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার।'
এই টুর্নামেন্টে খেলতে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে সংযুক্ত আর আমিরাতে পৌঁছাবেন ভারতীয় ও বিদেশি ক্রিকেটাররা। ৪ নভেম্বর শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপারনোভাস ও ভেলোসিটির ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে উইমেন্স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের এবারের আসর। ৫ নভেম্বর একই ভেন্যুতে সালমার ট্রেইলব্লেজার্সের মুখোমুখি হবে জাহানারার দল ভেলোসিটি। পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থাকা দুই দল আগামী ৯ নভেম্বর শারজাহতে ফাইনাল খেলবে।