সিনিয়রদের মনস্তাত্ত্বিক ভুলে হতাশ সিডন্স
মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে চাপ কাটিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেলেন সাকিব আল হাসান। তাদের ব্যাটে শুরুর চাপ কাটিয়ে তখন কিছুটা স্বস্তিতে বাংলাদেশ। কিন্তু বিরতির পর মাঠে নেমেই উল্টো পথে হাঁটলেন সাকিব। বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে সাজঘরে বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরে লিটন কুমার দাসও অনেকটা একইভাবে আত্মাহুতি দিলেন। মুশফিক রহিমের আউটও হতে পারে আলোচনার বিষয়বস্তু।
ভারতের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টেই যে বাংলাদেশের ইনিংসের এই চেহারা, তেমনও নয়। প্রায়ই উইকেট বিলিয়ে আসতে দেখা যায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। চট্টগ্রাম টেস্টেও দেখা গেছে তা। ব্যাপারটিকে মনস্তাত্ত্বিক ভুল হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। যা নিয়ে রীতিমতো হতাশ অস্ট্রেলিয়ান এই কোচ।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েন সাকিব, যদিও কোনো তাড়াই ছিল না। তার মতো অভিজ্ঞর কাছ থেকে এমন ব্যাটিং দেখে হতাশ সিডন্স, 'একজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এটি হতাশাজনক। সে মনস্তাত্ত্বিক ভুল করেছে! পুরো ইনিংসেই সে বারবার উইকেট ছেড়ে এগিয়ে খেলছিল। হয়তো বোলারদের লেংথ পরিবর্তনে বাধ্য করার চেষ্টা ছিল। আমার মনে হয়, তাদের (ভারতের বোলার) বোলিং লেংথ নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছিল সে। তাই লেংথ বদলানোর চেষ্টা করছিল।'
অনেকেই উইকেটে থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি, বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমে গেছে ২২৭ রানেই। এ নিয়ে হতাশার কথা জানিয়ে সিডন্স বলেন, 'এটা খুবই হতাশাজনক। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি। যখনই আমরা মাঠে নামি তার আগে অনেক আলোচনা করি এবং বলি যে টিকে থাকতে হবে। যখন কেউ ভালো শুরু পাবে তার অবশ্যই বড় স্কোর গড়া নিশ্চিত করতে হবে। চট্টগ্রামের মতোই হয়েছে এখানে। চারজন ছেলে (৩ জন) বিশের বেশি করেছে, কয়েকজন ১৫-১৬ করেছে।'
থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারার ব্যাপারটিকেই বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের পথের প্রধান বাধা মনে করেন সিডন্স। তার ভাষায়, 'এভাবে খেলে আমরা কখনই ম্যাচজয়ী ইনিংস গড়তে পারব না। যখন ছেলেরা থিতু হচ্ছে, তখনই আবার মনস্তাত্ত্বিক ভুল করছে। বল বেশ ঘুরেছে, কিন্তু পেস বোলারদের জন্য তেমন কিছু ছিল না। উমেশকে এতো উইকেট নিতে দেওয়া খুবই হতাশার।'
সাকিবসহ বাকিরা না পারলেও মুমিনুল হক দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন। ১২ ইনিংস পর হাফ সেঞ্চুরি করা সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে মুমিনুল ইতিবাচক থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে সিডন্স বলেন, 'আমার মনে হয় বাজে বল পাওয়ার চিন্তা না করে বরং তার অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব ছিল খেলায়। সে ভেবেছে আমি আজ ভালো স্কোর করব। আর এ রকম যখন ভাববেন, তখনই আপনার অনেক ভালো সুযোগ থাকে সফল হওয়ার।'