মিরপুরে ফেরার আনন্দ ম্লান বড় হারে
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে বলা হয় হোম অব ক্রিকেট। এই মাঠে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় প্রায়ই আক্ষেপের কথা জানান নারী ক্রিকেটাররা। আট বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মিরপুরে খেলতে পারেননি বলে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিকে। পারবেনই কী করে! বাংলাদেশ এই মাঠে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে ২০১২ সালে। অবশেষে জ্যোতির মতো অনেকেরই অপেক্ষা ফরালো, যদিও উপলক্ষ্যটি মনে রাখার মতো হলো না তাদের।
মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হয়েছে বাংলাদেশের, রোববার ছিল প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচে হারমানপ্রীত করের দলের বিপক্ষে তেমন লড়াইও করতে পারলো না বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে তারা। সিরিজের পরের দুটি টি-টোয়েন্টিসহ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। সেভাবে উইকেট না গেলেও ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে রান তুলতে সংগ্রাম করতে হয় তাদের। সাথী রানী, সোবানা মোস্তারী, স্বর্ণা আক্তারদের মাঝারি ইনিংসে ৫ উইকেটে ১১৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে স্মৃতি মান্ধানা ও অধিনায়ক হারমানপ্রীত করের ব্যাটে ১৬.২ ওভারেই জয় তুলে নেয় ভারত।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই শেফালিকে ভার্মাকে ফিরিয়ে দেন মারুফা। রানের খাতা খোলার আগেই মারুফার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নিতে হয় ভারতের ওপেনারকে। দ্বিতীয় জুটিও দীর্ঘ হয়নি সফরকারীদের।
দলীয় ২১ রানে জেমিমা রদ্রিগেজের স্টাম্প উপড়ে নেন সুলতানা খাতুন। ১৪ বলে ২টি চারে ১১ রান করেন জেমিমা। এখান দলের হাল ধরে জুটি বেধে তোলের দুই অভিজ্ঞ স্মৃতি মান্ধানা ও ম্যাচসেরা হারমানপ্রীত কর। তৃতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন তারা। সুলতানার বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৫টি চারে ৩৮ রান করেন মান্ধানা।
এরপর যসতিকা ভাটিয়াকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা হানমানপ্রীত। ৩৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এটা তার একাদশতম হাফ সেঞ্চুরি। ১২ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন যসতিকা। বাংলাদেশের সুলতানা খাতুন ২টি ও মারুফা আক্তার একটি উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে দারুণ শুরুর আভাস দিয়েও তা করতে পারেননি সাথী রানী ও শামীমা সুলতানা। দলীয় ২৭ রানে বিদায় নেন ১৩ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৭ রান করা শামীমা। দ্বিতীয় জুটির পথচলাও প্রায় সমান। দলীয় ৫২ রানে আউট হন ২৬ বলে ৪টি চারে ২২ রান করা সাথী।
কিছুক্ষণ পরই রান আউটে কাটা পড়েন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, ৭ বলে ২ রান করেন তিনি। এরপর চতুর্থ উইকেটে ২১ রানের জুটি গড়েন সোবানা ও সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা স্বর্ণা। ৩৩ বলে ২টি চারে ২৩ রান করে আউট হন সোবানা।
স্বর্ণা ধীর-স্থির শুরু করলেও পরে ছক্কা মেরে পুষিয়ে নেন। তবে তার মতো করে ব্যাট চালাতে পারেননি রান আউট হওয়া রিতু মনি, ১৩ বলে ১১ রান করেন তিনি। শেষ বল পর্যন্ত ব্যাট চালানো স্বর্ণা ২৮ বলে ২টি ছক্বায় অপরাজিত ২৮ রান করেন। ভারতের পুজা ভাস্ত্রাকার, মিন্নু মানি ও শেফালি ভার্মা একটি করে উইকেট নেন।