দারুণ লড়াইয়ে ম্যাচ টাই করে সিরিজ ভাগাভাগি বাংলাদেশের
সিরিজ জয়ের আশা জাগিয়েও হতাশ হতে হলো বাংলাদেশকে। ভারতকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ হারানোর সুযোগ এসেছিল, তবে সেটি দুহাত পেতে নিতে পারেননি নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।
তবে না জিতলেও, হারের বেদনায়ও পুড়তে হয়নি বাংলাদশকে। রুদ্ধশ্বাস এক লড়াই শেষে ম্যাচ হয়েছে টাই। আর তাতে সিরিজও শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়। ট্রফি ভাগাভাগি করে নিয়েছে দুইদল।
মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ভারতকে ২২৬ রানের বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জেতায় সিরিজে ১-১ এ সমতা বিরাজ করছিলো। বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের দিনে ইতিহাস গড়েছেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান ফারজানা হক পিংকি।
মেয়েদের ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেছেন ফারজানা হক পিংকি। তার অসাধারণ ইনিংসের সৌজন্যে বাংলাদেশও গড়েছে বিশাল সংগ্রহ।
শামীমা সুলতানা ও ফারজানা হক পিংকি ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৯৩ রান। ওপেনিং জুটিতে এর চেয়ে বেশি রান বাংলাদেশের মেয়েরা এর আগে আর মাত্র একবারই করতে পেরেছে, ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। শারমীন আক্তার ও শুকতারা রহমান মিলে ১১৩ রানের জুটি গড়েন সেই ম্যাচে।
জুটির রেকর্ড না হলেও ব্যক্তিগত রেকর্ডের পাতায় নাম লিখিয়েছেন ফারজানা হক। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম সেঞ্চুরিটি এসেছে তার ব্যাট থেকেই। শামীমার ৫২ ও ফারজানার ১০৫ রানের সৌজন্য ভারতের মেয়েদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
আগে ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা ৪ উইকেট হারিয়ে করে ২২৫ রান। মূলত দুই ওপেনারই বাংলাদেশের ইনিংসের ভিত গড়ে দেন। ফারজানা শুরুতে কিছুটা সময় নিয়ে খেলেন। শামীমা ৭৮ বলে ৫২ রান করে আউট হলে হাত খুলতে শুরু করেন ফারজানা। শামিমার ইনিংসে পাঁচটি চার ছিলো।
অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ৭১ রান যোগ করেন ফারজানা। জ্যোতি ৩৬ বলে ২৪ রান করে স্নেহা রানার বলে আউট হন। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রিতু মণি। ২ রান করে দেবিকা বিদ্যার বলে ফেরেন তিনি।
সোবহানা মোস্তারির সঙ্গে জুটিতে সেঞ্চুরি তুলে নেন ফারজানা। তার ১০৫ রানের ইনিংস থেমেছে ইনিংসের একদম শেষ বলে, রানআউট হয়ে। এই ইনিংসে ফারজানা চার মারেন ছয়টি। শেষ দিকে সোবহানার ২২ বলে ২৩ রানের ইনিংস বাংলাদেশের সংগ্রহকে ওপরে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শেফালি ভার্মাকে ৪ রানে ফেরান মারুফা আক্তার। শেফালি আউট হওয়ার আগেই অবশ্য স্মৃতি মান্ধানার ক্যাচ মিস করেন জ্যোতি। পরে হারলিনকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১০৭ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান মান্ধানা। ২৯ ওভারে ফাহিমা খাতুনের শিকার হওয়ার আগে ৮৫ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
ইনিংসের ৪২ তম ওভারে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। নাহিদা আক্তারের করা ওই ওভারে দুটি রান-আউটে ম্যাচে ফেরে তারা। ওভারের দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে হারলিন দেওল ফিরে যান, ১০৮ বলে ৭৭ রান করেন এই ব্যাটার। ওভারের শেষ বলে আরেকটি রান আউটের শিকার হোন দীপ্তি শর্মা।
২১৬ থেকে ২১৭ রানে আরো তিন উইকেট হারায় ভারত। ম্যাচ হয়ে ওঠে উত্তেজনায় ভরপুর। শেষ চার বলে মাত্র এক রান দরকার ছিলো ভারতের, হাতে ছিলো এক উইকেট। কিন্তু ভারতের মেঘনা ক্যাচ তুলে দেন, যা তালুবন্দী করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি। দুই দলের স্কোর সমান হওয়ায় খেলা টাই হয়।
অপরাজিত থাকলেও ম্যাচ জিতিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরতে পারেননি জেমিমা। ৩৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাহিদা ৩টি ও মারুফা দুটি উইকেট শিকার করেন।