ঘরের মাঠে এভাবে কখনই টেস্ট হারেনি ভারত
ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। তিন ফরম্যাটের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তা দেখা যায়। মর্যাদার এই ফরম্যাটে কোনো কোনো ম্যাচে মুহূর্তেই ম্যাচের রং পাল্টে যায়। ভালো অবস্থা থেকে কেউ হেরে বসে, কোণঠাসা অবস্থা থেকে কেউ আবার জিতে যায়। টেস্ট ম্যাচের অনিশ্চয়তা কেমন হয়, ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার হায়দরাবাদ টেস্টে চোখ দিলেই পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা।
এই ম্যাচে ভারত হারতে পারে, কে ভেবেছিল! প্রথম ইনিংসেই দুইশ ছুঁইছুঁই রানের লিড পাওয়া ভারতের পক্ষেই বাজি ছিল সবার। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টেছে, শেষ হাসি উঠেছে ইংল্যান্ডের মুখে। অলি পোপের ব্যাটিং দৃঢ়তা ও টম হার্টলির স্পিন ঘূর্ণিতে স্মরণীয় এক জয় পেয়েছে ইংলিশরা। পিছিয়ে থেকেও ভারতকে ২৮ রানে হারিয়েছে বেন স্টোকসের দল। ৬২ রানে ৭ উইকেট নেন হার্টলি, এরআগে ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখান পোপ। ইংলিশদের জয়ের নায়ক এ দুজনই।
যদিও আর সবার মতো ভারতের কাছেও এই হার অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার কথা। হওয়াটা স্বাভাবিকই, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দেশের মাটিতে এভাবে আগে কখনই হারেনি তারা। প্রথম ইনিংসে রোহিত শর্মার দল লিড পায় ১৯০ রানের। এতো রানের লিড নিয়ে ঘরের মাঠে কখনই টেস্ট হারেনি ভারত। ঘরের মাঠ-বিদেশ বিদেশ মিলিয়ে এতা রানের লিড নিয়ে তারা এরআগে একবার হেরেছে।
২০১৫ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯২ রানের লিড নিয়েও হেরে যায় ভারত। দেশের মাটিতে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৫ রানের লিড নিয়ে ভারত হেরেছে ১৯৬৪ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসে এরচেয়ে বেশি রানের লিড পেয়ে ঘরের মাঠে কখনই হারেনি তারা। সেই রেকর্ড এবার বদলে গেল ইংলিশদের রাজত্বে। ২০১০ সালের পর এ নিয়ে ঘরের মাঠে মাত্র সপ্তম টেস্ট হারলো ভারত।
ভারতের অবিশ্বাস্য হারের ম্যাচে ইংল্যান্ডের অর্জন অনেক। প্রথম ইনিংসে রানের হিসেবে পিছিয়ে থাকার হিসেবে এটা তাদের তৃতীয় সেরা সাফল্য। এরচেয়ে বেশি রানে প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকে তারা এরআগে দুবার জিতেছে। ১৮৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬১ রান ও ১৯৬১ সালে অজিদের বিপক্ষেই ২২৭ রানে পিছিয়ে থাকার পরও ম্যাচ জেতে ইংল্যান্ড। অভিষেকে ইংলিশ স্পিনার হিসেবে দ্বিতীয় সেরা বোলিং এখন টম হার্টলির। অলি পোপের ১৯৬ রানের ইনিংসটিও জায়গা পেয়েছে রেকর্ড বইয়ে।