মান্ধানা-শেফালির দাপটে দুই ম্যাচ আগেই সিরিজ হার বাংলাদেশের
একইভাবে হতাশার গল্প লিখে যাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শুরুর চাপ সামলে ঠিক পথে থেকেও খেই হারায় বাংলাদেশ, বড় হয়নি সংগ্রহ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতেও হলো দারুণ শুরু, কিন্তু আগের ম্যাচের মতোই হঠাৎ-ই দিক হারিয়ে লক্ষ্যের অনেক আগেই থামতে হলো। যে রান এলো তা, তা ভারতের দুই ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মার সামনে হয়ে উঠলো মামুলি। সফরকারীদের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচ হারলো নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে হারায় দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খোয়ালো স্বাগতিকরা। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে সিরিজ হার হয়তো হতাশার কিছু নয়। কিন্তু সামান্যতম লড়াইও করতে না পারাটা নিশ্চয়ই অপ্রত্যাশিত। সিরিজের পরের দুটি ম্যাচ জন্য হয়ে উঠলো নিয়ম রক্ষা, যে দুই ম্যাচে আগামী ৬ ও ৯ মে একই মাঠে ভারতের বিপক্ষ লড়বে বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা দারুণ হয় বাংলাদেশের। এরপর দুই ওপেনারকে হারানোর পরও জ্যোতি ও সোবহানা মোস্তারীর ব্যাটে বেঁচে থাকে লড়াকু সংগ্রহের আশা। কিন্তু ১৪তম ওভারে এই জুটি ভাঙার কিছুক্ষণ পর আসা-যাওয়ার মিছিল শুরু হয় ৮ উইকেটে ১১৭ রানে থামে বাংলাদেশ। জবাবে মান্ধানা ও শেফালির দাপুটে ব্যাটিংয়েই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের। বাকি কাজটুকু সারেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর ও রিচা ঘোষ, ৯ বল হাতে রেখে জেতে সফরকারীরা।
লক্ষ্য তাড়ায় দলকে দুর্বার শুরু এনে দেন মান্ধানা ও শেফালি। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার থেকে ৫৯ রান তোলেন দুজন। এরপর আরও কিছুক্ষণ চলে তাদের ব্যাটিং শো। উদ্বোধনী জুটিতে ৭৩ বলে (১২.১ ওভার) ৯১ রানের জুটি গড়েন মান্ধানা ও শেফালি। ৩৮ বলে ৮টি চারে ৫১ রান করা ম্যাচসেরা শেফালিকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন রিতু মনি। কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন ৪২ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৭ রান করা মান্ধানা। দুই অপরাজিত ব্যাটার হারমানপ্রিত ৬ ও রিচা ৫ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশের নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান ও রিতু মনি একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাাটিং করা বাংলাদেশ দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটে পাওয়ার প্লের ৬ ওভার থেকে ৪৪ রান পায়। সপ্তম ওভারে ভাঙে এই জুটি, ১৬ বলে ৯ রান করে ফেরেন মুর্শিদা। দারুন ব্যাাটিং করা দিলারাও আর বেশি সময় টিকতে পারেননি, ২৭ বলে ৫টি চারে ৩৯ রান করে আউট হন তিনি। এরপর জুটি গড়েন জ্যোতি ও সোবহানা, তৃতীয় উইকেটে ৩০ রান যোগ করেন তারা।
১৪তম ওভারে গিয়ে থামেন সোবহানা, ২০ বলে ২০ রান করেন তিনি। এই ওভারে ফাহিমা খাতুনকেও ফেরান শ্রেয়াঙ্কা পাতিল। পরের সাড়ে তিন ওভারে উইকেট না গেলেও রান সেভাবে আসেনি, জ্যোতি চেষ্টা করেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ১৯ তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে একটি চারে ২৮ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। রিতু মনি ৮ ও রাবেয়া ৭ রান করেন। ব্যাটিংয়ে হঠাৎ করে দিক হারানোর মতো রান আউট হওয়াটাও বাংলাদেশের জন্য রীতিমতো রোগে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির মতো আজও দুজন ব্যাটার রান আউটে কাটা পড়েন। ভারতের রাধা যাদব ২টি এবং রেনুকা সিং, পুজা ভাস্ত্রকার ও পাতিল এক করে উইকেট নেন।