রেকর্ড গড়া জয়ে এশিয়া কাপের সেমিতে বাংলাদেশ
শক্তি, অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়া নারী ক্রিকেট দলের ব্যবধান বেশ। মাঠে নামতেই সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মালয়েশিয়ার দুর্বল বোলিংয়ের বিপক্ষে রান তুলতে কোনো বেগই পেতে হয়নি বাংলাদেশের ব্যাটারদের। ম্যাচসেরা মুর্শিদা খাতুন ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির দাপুটে ব্যাটিংয়ে রেকর্ড সংগ্রহ গড়ে তারা। পরে বল হাতে শাসন করে মালয়েশিয়াকে অল্প রানেই গুটিয়ে দিয়ে বিশাল জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
বুধবার শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলাতে নারী এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে রানের হিসাবে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় জয়, নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ২৪৯ রানে, ২০১৯ সাউথ এশিয়ান গেমসে মালদ্বীপের বিপক্ষে।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে পাওয়া এই জয়ে সেমি-ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। আজ রাতে শ্রীলঙ্কা-থাইল্যান্ড ম্যাচের ফল যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ গ্রুপের সেরা দুই দলের মধ্যেই থাকবে। দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লঙ্কানরা। তিন ম্যাচের দুটিতে জেতা বাংলাদেশ দুই নম্বরে। থাইল্যান্ডের মেয়েরা দুই ম্যাচের একটিতে জিতেছে। গ্রুপের রানার্সআপ হলে সেমিতে ভারতের বিপক্ষে লড়তে হবে বাংলাদেশকে।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। মুর্শিদা ও জ্যোতির হাফ সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ১৯১ রান রান তোলে তারা। যা এশিয়া কাপের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এবং আসরটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে এটা জ্যোতি-মুর্শিদাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২৫৫/২, ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে মালদ্বীপের বিপক্ষে। বাংলাদেশের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেশিপথ এগোতে পারেনি মালয়েশিয়া। ৮ উইকেটে ৭৭ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস।
বড় সংগ্রহ গড়ে পরে বল হাতেও দাপট দেখায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ কোনো রান স্কোরকার্ডে যোগ করার আগেই আঘাত হানেন ডানহাতি পেসার জাহানারা আলম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও সেটা খুব একটা কাজে লাগেনি মালয়েশিয়ার। এরপর নিয়মিত ধারায় উইকেট হারিয়ে ৭৭ রানেই থামতে হয় তাদের। সর্বোচ্চ ২০ রান করেন এলসা হান্টার। ওয়ান জুলিয়া ১১ ও মাহিরাহ ইজ্জাতি ইসমাইল ১৫ রান করেন।
বাংলাদেশের প্রায় সবাই কৃপণ বোলিং করেন। ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রানে ২টি উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। ৪ ওভারে ২০ রানে এক উইকেট নেন জাহানারা। ৪ ওভারে ১৭ রান খরচায় সাবিকুন নাহার জেসমিনের শিকার এক উইকেট। বারেয়া খাতুন ৩ ওভারে ১০ রান দেন, নেন একটি উইকেট। এক ওভারে ২ রানে একটি উইকেট পান রিতু মনি। স্বর্ণা আক্তারও একটি উইকেট পান, ৩ ওভারে তার খরচা মাত্র ৭ রান।
এর আগে মালয়েশিয়ার বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ওপেনার দিলারা আক্তার ২০ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করেন। দ্বিতীয় উইকেটে ৮৯ রানের জুটি গড়েন মুর্শিদা ও জ্যোতি। ৫৯ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় ৮০ রান করেন ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুর্শিদা, যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা। আরও দ্রুত রান তোলা জ্যোতি ৩৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন, এটা তার অষ্টম হাফ সেঞ্চুরি। মালয়েশিয়ার ইজ্জাতি ইসমাইল ও এলসা হান্টার একটি করে উইকেট পান।