ব্যাটিংয়ের সময় হেলমেটের ফিতা কামড় দিয়ে ধরে রেখেছিলেন কেন সাকিব
গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে চোখের সমস্যা ধরা পড়ে সাকিব আল হাসানের। ভারতেই দেখান চোখের চিকিৎসক। ফল না মেলায় দেশে ফিরে আবারও দ্বারস্থ হন চিকিৎসকের, চোখে তোলেন চশমা। বিপিএলের অনুশীলনে চশমা পরে ব্যাটিং করতে দেখা যায় সাকিবকে। এরপরও সমাধান পাননি, তাই পরে দেশে-বিদেশে বেশ কয়েকজন চোখের চিকিৎসক দেখান অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।
অনেক পথ ঘুরে এখনও বাঁ চোখের সমস্যার পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি সাকিব। চোখে সমস্যা ধরা পড়ার পর থেকে তার ব্যাটিংয়ে অনেক ধরনের পরিবর্তনই দেখা গেছে। হেড পজিশন, ব্যাটিং স্টান্স পাল্টেছেন তিনি। বোলার ডেলিভারি ছাড়ার আগ মুহূর্তে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বল বোঝার চেষ্টা করেন সাকিব। চশমা, নেকব্যান্ড পরে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তিনি।
এবার ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে ব্যাটিংয়ের সময় অদ্ভুত এক কাজ করতে দেখা গেল তাকে। ব্যাটিংয়ের পুরোটা সময় হেলমেটের ফিতা কামড় দিয়ে ধরে রেখেছিলেন সাকিব। ৪০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর উইকেটে যান সাকিব। লক্ষ্য করা যায়, হেলমেটের ফিতায় কামড় দিয়ে রেখেছেন তিনি। শুরুতে বিষয়টি সেভাবে সবার চোখে পড়েনি। কিন্তু পুরোটা সময় এভাবেই ব্যাটিং করায় খেলা দেখা প্রায় সবাই বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন।
১৪৯ রানেই অলআউট হওয়া ইনিংসে সাকিব সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ভারতের উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্তের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। পুরোটা সময় সাকিব কেন এভাবে ব্যাটিং করেছেন, সেটা জানা যায়নি। তবে চোখের সমস্যার কারণে হেড পজিশন ঠিক রাখতে অনেক কিছুই চেষ্টা করার কারণে ধারণা করা যায়, হয়তো ঠিকভাবে বল দেখতেই সাকিব হেলমেটের ফিতা কামড়ে ছিলেন। চোখের সমস্যার প্রভাব স্বভাবতই তার ব্যাটিংয়ে পড়েছে, অনেক দিন ধরেই সাকিবের ব্যাটে রান নেই।
বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের চোখের সমস্যা ধরা পড়ে গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে। ব্যাটিংয়ের সময় বলা দেখা নিয়ে খুবই অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। চেন্নাইয়ে চিকিৎসক দেখান সাকিব, তাকে চোখের ড্রপ দেওয়া হয় সে সময়। তবে সেই ড্রপ কাজে আসেনি। 'স্ট্রেস' থেকে তার চোখের সমস্যা হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা। চাপ কমে গেলে সমস্যা কমে যাবে বলেও জানানো হয়।
চোটের কারণে বিশ্বকাপের শেষ অংশে ছিটকে যাওয়া সাকিব যুক্তরাষ্ট্রে যান পরিবারের কাছে। চাপ কমলেও তার চোখের সমস্যা দূর হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে আবারও চিকিৎসক দেখান তিনি। যদিও তার চোখে কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা। চাপ ছিল না বলেই চোখের সমস্যা পাওয়া যায়নি বলে ধরে নেওয়া হয়।
এরপর নির্বাচনের মাঠে তুমুল ব্যস্ত থাকতে হয় মাগুরা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাকিবকে। ব্যস্ততা, চাপে আবারও চোখের সমস্যা ফিরে আসে তার। রংপুর রাইডার্সের অনুশীলনে চমশা পরে ব্যাটিং করেও পাননি সমাধান। স্ট্রেস থেকেই চোখের সমস্যা হচ্ছে কিনা, সেটা নিশ্চিত হতে লন্ডনে চিকিৎসক দেখাতে যান সাকিব। সেটাতেও কাজ না হওয়ায় সিঙ্গাপুরে গিয়ে চোখের চিকিৎসা নেন তিনি।