রেকর্ড জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় আফগানিস্তানের
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই এমন কিছুর বার্তা দিয়ে রেখেছিল আফগানিস্তান। বোলিং দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল্প রানেই গুটিয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছিল আফগানরা। দ্বিতীয় ম্যাচেও জারি থাকলো তাদের শাসন। এবার ব্যাটে-বলে ছড়ি ঘুরিয়ে প্রোটিয়াদের বিশাল ব্যবধানে হারালো আফগানিস্তান, জিতে নিলো ঐতিহাসিক সিরিজ।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতে ইতিহাসও লিখে ফেলেছে তারা। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে দলটি।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে স্মরণীয় সিরিজ জিতলো আফগানিস্তান। প্রথমবারের মতো র্যাঙ্কিংয়ে সেরা পাঁচে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো ক্রিকেটের 'নতুন শক্তি' হয়ে ওঠা দলটি। সিরিজ জয়ের ম্যাচে ব্যাট হাতে আফগানদের পথ দেখান সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। পরে বল হাতে জাদু দেখান ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা বার্থডে বয় রশিদ খান।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে আফগানিস্তান। গুরবাজের সেঞ্চুরি এবং ওমরজাইয়ের ঝড়ো ইনিংসের সঙ্গে রহমত শাহর হাফ সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩১১ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে তারা। যা ওয়ানডেতে তাদের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। বড় লক্ষ্য তাড়ায় দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও নানগেয়ালিয়া খারোতের বোলিং তোপের মুখে ৩৪.২ ওভারে ১৩৪ রানেই অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ওয়ানডেতে ১০৭ রানে অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে হারে প্রোটিয়ারা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন আপ একাই এলোমেলো করে দেন রশিদ। দলটির প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনকেই নিজের শিকারে পরিণত করেন দুর্বার বোলিং করা আফগান এই তারকা লেগ স্পিনার। এরপর স্পিন ঘূর্ণিতে প্রোটিয়াদের ইনিংস গুটিয়ে দেন খারোতে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাত্র চারজন দুই অঙ্কের রান করেন। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৩৮, টনি ডি জর্জি ৩১, রিজা হেনড্রিকস ১৭ ও এইডেন মার্করাম ২১ রান করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাতজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রানে পৌঁছানোর আগেই আউট হন, এদের মধ্যে কেউ ৫ রানের বেশি করতে পারেননি। প্রোটিয়াদের দিক ভুলিয়ে দেওয়া রশিদ ৯ ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র ১৯ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন। ওয়ানডেতে এটা তার পঞ্চম সেরা বোলিং, আফগানিস্তানেরও এটা পঞ্চম সেরা বোলিং। বাঁহাতি স্পিনার খারোতে ৬.২ ওভারে ২৬ রানে ৪টি উইকেট নেন। এই ফরম্যাটে এটাই তার সেরা বোলিং। প্রোটিয়াদের বাকি উইকেটটি নেন ওমরজাই।
এর আগে বড় সংগ্রহ গড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন গুরবাজ। ডানহাতি এই ওপেনার ১১০ বলে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। এটা তার সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। চারে নেমে ঝড় তোলা ওমরজাই ৫০ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় হার না মানা ৮৬ রানের ইনিংস খেলেন। ৬৬ বলে ৫০ রান করেন রহমত। এ ছাড়া রিয়াজ হাসান ২৯ ও মোহাম্মদ নবী ১৩ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিডি, নান্দ্রে বার্গার, এনকাবায়োমজি পিটার ও এইডেন মার্করাম একটি করে উইকেট পান।