‘স্ট্যাটাস দিলেই সবকিছুর সমাধান হয়ে যায়, প্রতিদিন একটা করে স্ট্যাটাস দেব’
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দেশের ক্রিকেট উত্তাল। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে তার দেশে আসার খবরে একদল মিরপুর স্টেডিয়ামের বাইরে বিক্ষোভ করে। পরের দিন তাকে খেলানোর পক্ষে হয় আন্দোলন, যা এখনও চলমান। রোববার মিরপুর স্টেডিয়ামের বাইরে সাকিবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন হয়েছে, মিছিল ছাড়াও চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কেউ-ই কথা বলেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাউকে পোস্টও দিতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেটাররা সোচ্চার হলেও চিত্র বদলাতো না বলে মনে করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ অধিনায়ক মজা করে বললেন, ফেসবুকে প্রতিদিন একটি করে স্ট্যাটাস দিয়ে সমস্যার সমাধান করবেন তিনি।
২১ অক্টোবর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার প্রথম টেস্ট। সাকিবের দেশে ফিরতে না পারার ঘটনায় ক্রিকেটারদের নিরবতা নিয়ে আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে শান্তকে প্রশ্ন করা হয়। প্রসঙ্গটি আসে তাদের আগের কার্যক্রমের কারণে। গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত গার্মেন্টসকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় সাকিবের নাম আসার পর জাতীয় দলের প্রায় সব ক্রিকেটারই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
জাতীয় দলের বাইরে থাকা অনেক ক্রিকেটারও সাকিবের পক্ষে সমর্থনের কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। বেশিরভাগ ক্রিকেটারই মামলায় সাকিবের নাম থাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অনেকের দাবি ছিল, সাকিবের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাকিবের দেশে ফিরে শেষ টেস্ট খেলতে না পারার ব্যাপারে সব ক্রিকেটার নিশ্চুপ অবস্থানে।
ব্যক্তিগত জায়গা থেকে প্রতিক্রিয়া বা প্রতিবাদ না জানালেও সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ কথা বলেছেন শান্ত। তিনি জানান, সাকিবের দেশে ফিরতে না পারার ব্যাপারটি দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশ অধিনায়ক এটাও মনে করালেন শেষ টেস্ট খেলেননি মানে অবসর নেননি সাকিব। ভবিষ্যতে তাকে দেশ থেকে বিদায় দিতে পারবেন বলেও আশাবাদী শান্ত।
মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানালেও এবার কেন নিরব, এমন প্রশ্নের উত্তরে শুরুতে ক্রিকেটে মনোযোগী হওয়ার কথা জানান তিনি। শান্ত বলেন, 'এ রকম কোনো কিছুই না (ভয়-শঙ্কা কাজ করেনি)। আমি যেটা বললাম, আগামীকাল একটা টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। হ্যাঁ, উনি যদি এখান থেকে শেষ করতে পারতেন, খুব ভালো হতো। তবে ফোকাসটা পরবর্তীতে ওই জায়গায় আনা হয়েছে যে, কীভাবে আমরা টেস্ট ম্যাচটা জিততে পারি।'
'ওইটা আসলে যতো কথা বলব এখান থেকে… কোনো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ আমরা সবাই জানি, কেন উনি আসতে পারছেন না। আর এখন বর্তমান সময়ে যে রকম অবস্থা, ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিলেই সবকিছুর সমাধান হয়ে যায়, চিন্তা করছি প্রতিদিন আমিও একটা করে স্ট্যাটাস দেব।' যোগ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ভারত সফরে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে খেলবেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। নিরাপত্তাজনিত কারণে শুরুতে তার দেশের মাটিতে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও তা কেটে যায়। সাকিবকে নিয়েই প্রথম টেস্টের দল ঘোষণা করে বিসিবি। বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে দলে নেওয়ার খবরে বাড়ে উত্তেজনা।
মিরপুর স্টেডিয়ামের দেয়ালে বিরুদ্ধ বার্তা লেখাসহ তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিসিবিতে স্মারকলিপি জমা দেয় আন্দোলনকারীরা। পরের দিন থেকে আন্দোলন শুরু করে সাকিবভক্তরাও। এমন উত্তপ্ত অবস্থার মাঝেই কাল মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।