হারের বৃত্ত ভেঙে সিলেট স্ট্রাইকার্সের টানা দ্বিতীয় জয়
একটি জয় কতোটা তৃপ্তির, সেটা বুঝতে চতুর্থ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। হার দিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরুর পর থেকে কেবলই হেরেই যাচ্ছিল দলটি। ঘরের মাঠে এসে একটি জয় পেতেই যেন বদলে গেলো সিলেট। ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে প্রথম জয়ের স্বাদ নেওয়া দলটি পরের ম্যাচেও ওড়ালো বিজয় নিশান, টানা তিন হারের পর টানা দুই জয় তুলে নিয়ে কিছুটা স্বস্তিতেই এখন আরিফুল হকের দল।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সকে ৮ রানে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এরপরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বর দল তারা, পাঁচ ম্যাচে দুই জয়ে তাদের পয়েন্ট চার। আজকের ম্যাচ হারের পরও সিলেটের চেয়ে দুই ধাপ উপরে খুলনা। মেহেদী হাসান মিরাজের দল চার ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে আছে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে ঘরের মাঠের দল সিলেট। রনি তালকুদারের হাফ সেঞ্চুরির পর ম্যাচসেরা জাকির হাসানের দুর্বার ইনিংসে সামনে আগায় দলটি। এ দুজনের ব্যাটে ৫ উইকেটে ১৮২ রান তোলে সিলেট। জবাবে পাওয়ার প্লের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও চাপ কাটিয়ে সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখে খুলনা, যা বেঁচে থাকে শেষ ওভার পর্যন্ত। শেষ ওভারের প্রথম ৩ বলে ৯ রান তুলে নেন আবু হায়দার রনি। কিন্তু এরপরই তার বিদায়, পরের বলেও উইকেট। বাকি তিন বলে এক রান তুলে ৮ রানে হারে খুলনা, দলটি ৯ উইকেটে ১৭৪ রান তোলে।
লক্ষ্য তাড়ায় উইলিয়াম বসিস্তো সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। যদিও খুলনার অস্ট্রেলিয়ান এই ওপেনার টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করতে পারেননি। ৪০ বলে ৫টি চারে ৪৩ রান করেন তিনি। মাঝ দিকে লড়াই করে দলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন মোহাম্মদ নওয়াজ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। যদিও তাদের লড়াই যথেষ্ট ছিল না। নওয়াজ ১৮ বলে ৩৩ ও অঙ্কন ১৬ বলে ২৮ রান করেন। দারবিশ রাসুলি ও মিরাজ ১৫ রান করে করেন। জিয়াউর রহমান ১৬ বলে ২৮ রান করেন। ৪ বলে ১৪ রান আসে আবু হায়দারের ব্যাট থেকে। সিলেটের তানজিম হাসান সাকিব, রিস টপলি ও রুয়েল মিয়া ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা সিলেটকে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে পথ দেখান ম্যাচসেরা জাকির। চারে নেমে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪৬ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৭৫ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন। এই ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের পক্ষে অনেকগুলো রেকর্ড গড়েছেন তিনি। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, পেছনে ফেলেছেন মোহাম্মদ মিঠুনকে। সবচেয়ে বেশি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসে ছাড়িয়ে গেছেন তাওহিদ হৃদয়কে, জাকিরের পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস ৬টি।
দলটির পক্ষে ছক্কার রেকর্ডটিও নিজের করে নিয়েছেন এই বাঁহাতি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে জাকির ছক্কা মেরেছেন ৩০টি, ছাড়িয়ে গেছেন ২৮ ছক্কার মালিক নিকোলাস পুরানকে। দলটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এখন তিনি, করেছেন ৭০১ রান। পেছনে ফেলেছেন ৬৯১ রানের মালিক নাজমুল হোসেন শান্তকে। জাকিরের এমন ইনিংসের আগে দারুণ ব্যাটিং করেন রনি। ডানহাতি এই ওপেনার ৪৪ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রান করেন। ৩ ছক্কায় ৬ বলে ২০ রান করেন অ্যারন জোন্স। ১৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২১ রান করেন অধিনায়ক আরিফুল। খুলনার আবু হায়দার ও জিয়াউর ২টি করে উইকেট নেন।