রাহি-সাদমানের বাদ পড়া ও দলের অন্যদের নিয়ে যা বললেন প্রধান নির্বাচক
আবু জায়েদ রাহিকে দেখিয়ে একটা সময়ে বলা হতো, টেস্টে পেস আক্রমণ সামলানোর অস্ত্র পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। শুরুর কয়েক টেস্টে নিজেকে সেভাবেই প্রমাণ করেন ডানহাতি এই পেসার। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার প্রয়োজন কমেছে বাংলাদেশ দলের কাছে, সর্বশেষ দুই টেস্ট সিরিজে একটি ম্যাচও খেলা হয়নি রাহির।
শেষ দুই সিরিজে খেলার সুযোগ না পেলেও দলে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের এই পেসারকে। কিন্তু ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের স্কোয়াডেই জায়গা হয়নি রাহির। তাসকিন আহমেদ চোটের কারণে দলের বাইরে, শঙ্কা আছে শরিফুল ইসলামকে নিয়েও। পেস আক্রমণের এমন অবস্থায় তার বাদ পড়া অবাক করার মতোই ঘটনা।
যদিও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু খুব সহজেই রাহির বাদ পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে দিলেন। তার মতে, অতিরিক্ত সুইং পেতে সাধারণত রাহিকে দলে নেওয়া হয়। ঘরের মাঠে সেটা সম্ভব নয় বলে তাকে বিবেচনা করা হয়নি। রোববার ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। রাহি ছাড়াও দল থেকে বাদ পড়েছেন সাদমান ইসলাম অনিক। রাহি ও সাদমানের বাদ পড়া ও অন্য ক্রিকেটারদের নিয়ে অনেক কথা বলেন প্রধান নির্বাচক।
রাহিকে বাদ দিয়ে পেস আক্রমণে খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে অনভিষিক্ত রেজাউর রহমান রাজাকে। রাহির বাদ পড়া, রাজার সুযোগ পাওয়া নিয়ে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'রাহির ব্যাপারটা হোম কন্ডিশনে খেলা, যেহেতু অতিরিক্ত সুইং যখন দরকার হয়, তখন ওকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি।'
'রাজা এইচপি ট্রেনিংয়ে খুব ভালো করেছে। কিছু ম্যাচে দেখলাম বেশ ভালো গতিতে বল করছে। পেসের ভ্যারিয়েশনের জন্য এই জায়গাটায় একটু চেঞ্জ এনেছি। ইনজুরি নিয়ে চিন্তাও আছে। যেহেতু শরিফুল পুরোপুরি ফিট না, তবুও আশা করছি প্রথম টেস্ট থেকে ওকে আমরা পেয়ে যেতে পারি। আর খালেদ ও এবাদত আছে। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, তিন পেসার তো আমাদের লাগবে। সেই চিন্তা করে রাজাকে বিকল্প হিসেবে নিয়েছি।' যোগ করেন প্রধান নির্বাচক।
রাহিকে নিয়ে মিনহাজুল আবেদীন আরও বলেন, 'বিবেচনায় কিছু কিছু স্টেপ আছে, খেলোয়াড়দের সমন্বয় তৈরি করতে হয়। থাকছে না এটা ঠিক না, সে তো গত সিরিজেও দলে ছিল। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, একটু টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছি, আমাদের অন্য একটা পরিকল্পনায় খেলা হয়, তাই ওকে বাদ রেখেছি। আর প্রস্তুতি ম্যাচের দলে আছে, অনেকদিন খেলার মধ্যে নেই। এখানে দেখা যাবে কেমন বল করে।'
ফর্মে না থাকায় টেস্টের নিয়মিত ওপেনার সাদমানকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে দ্বিতীয় টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করলে সুযোগ থাকবে তারও। মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, সাদমানকে আমরা অনুশীলন ম্যাচে দলে রেখেছি। আরও কিছু খেলোয়াড় আছে ওই জায়গায়। তৈরি রাখা হচ্ছে সব খেলোয়াড়কে। এখন তো বায়ো বাবলের বাধা নেই, তাই যখন যাকে দরকার, দলে নেয়া যাবে।'
আরও অনেক ক্রিকেটার নিয়েই আলোচনা হয়েছে, যেখানে নাম ছিল টেস্ট খেলতে না চাওয়া মুস্তাফিজুর রহমানেরও। দ্বিতীয় টেস্টে রাহি-সাদমানদের বিবেচনা করার ইঙ্গিত দিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, 'আমরা যতগুলো চুক্তির ক্রিকেটার আছে, সবাইকে নিয়ে আলোচনা করি। মুস্তাফিজকে নিয়েও আলোচনা করেছি। এটা আমাদের মাথায় আছে। যখন দলের প্রয়োজন হবে, তখন দেখব। এখন আমরা প্রথম টেস্টের দল দিয়েছি। যদি দ্বিতীয় টেস্টে দরকার হয়, তখন চিন্তা করব।'