রান বন্যা বইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টিকেট পাচ্ছেন বিজয়
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে, ক্রিকেটে পুরো মনোযোগ ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এমন সময়ে দিক হারানোর শঙ্কা থাকে যেকোনো ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে। কিন্তু এনামুল হক বিজয়ের লক্ষ্য অনড়, পৌঁছাতেই হবে সেখানে। হাল না ছেড়ে চালিয়ে যান পরিশ্রম, ঘরোয়া ক্রিকেটে সুযোগ পেলেই ব্যাটকে কথা বলান নিজের মতো করে। আর সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তো রান বন্যা বইয়ে রেকর্ডের ছড়াছড়ি করে দেন বিজয়। সেটারই পুরস্কার পাচ্ছেন ডানহাতি এই ওপেনার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিজয়কে দলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। আগামী মাসের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে বিজয় রাখা হবে বলে জানান জালাল ইউনুস।
সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যাট হাতে স্বপ্নের ছন্দে ছিলেন বিজয়। মাঠে নামলেই তার ব্যাটে রানের ফোয়ারা বয়ে গেছে। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১৫ ম্যাচে ৩টি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৮১.২৮ গড়ে ১ হাজার ১৩৮ রান করেছেন বিজয়। তাতে রীতিমতো ইতিহাস গড়া হয়ে গেছে তার। ২০১৩ সালে প্রিমিয়ার লিগ লিস্ট 'এ' মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে হাজার রানের মাইলফলক গড়েন বিজয়। স্বাভাবতই এক আসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও এখন ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের দখলে।
এমন আসর পার করার পর তাকে নিয়ে ক্রিকেট মহলে অনেক আলোচনা হয়েছে। জোর দাবি উঠেছে বিজয়কে দলে ফেরানোর। আগেই জানা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে বিবেচনা করা হবে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেটাই নিশ্চিত করে জানালেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান।
বিজয়কে দলে নেওয়ার ব্যাপারটি নির্বাচকদের ওপর হলেও তার ফেরা নিয়ে এক রকম নিশ্চয়তাই দিয়ে দিলেন জালাল ইউনুস। জানালেন দলের পরিকল্পনায় বিজয়কে বিবেচনা করার কথা। তিনি বলেন, 'বিজয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আছে। টি--টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজে থাকবে আশা করি। এটা নির্বাচকদের ব্যাপার। তারপরও আমার মনে হয় তারা বিবেচনা করছে। নিশ্চিতভাবে বিজয় টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে দলে থাকছে।'
বাংলাদেশের হয়ে ৪টি টেস্ট, ৩৮টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলা বিজয় এক সময় জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে খারাপ সময়ের শুরু তার। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে আঘাত পান তিনি। ওই ইনজুরিতে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকতে হয় তাকে। এরপর বিভিন্ন সময়ে সুযোগ পেলেও নিজেকে মেলে ধরা হয়নি তার। জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ২০১৯ সালে খেলেছেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সূচি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি বিসিবি। জানা গেছে সফরে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুটি টেস্ট এবং তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়াম ও ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে টেস্ট সিরিজ হওয়ার কথা। এরপর ২ ও ৩ জুলাই প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ডমিনিকায়। ৭ জুলাই গানায়ায় অনুষ্ঠিত হবে শেষ টি-টোয়েন্টি। ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে সিরিজের ম্যাচগুলো।