রাঙামাটি আদালতে জজ নেই দেড় মাস, বিপাকে বিচারপ্রার্থীরা
দেড় মাস ধরে রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জজের পদটি শূন্য থাকায় আদালতের বিচারিক কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন বিচার প্রার্থীরা।
রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উথৈয়াইমং মারমা বলছেন, কবে নিয়োগ দেওয়া হবে নতুন জজ, তা জানেন না কেউই।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জরুরী ভিত্তিতে রাঙামাটিতে জজ নিয়োগ দেওয়া দরকার। জজ না থাকার কারণে আদালতের কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বাড়ছে মামলার জট।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১০ জুলাই জেলা ও দায়রা জজ দলিল উদ্দিন চাকুরী থেকে অবসরে যান। এরপর এই শূন্য পদে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
জজের অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আদালতে নেই অন্য কোনও বিচারক। আদালতে একজন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থাকলেও তাঁর জজের অধীন মামলাগুলোর বিচার করার বিচারিক ক্ষমতা নেই। ফলে জজের বিচারাধীন মামলাগুলো আটকে আছে। যার প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মামলাতেও।
রাঙামাটির সিনিয়র আইনজীবী সাইফুল ইসলাম পনির বলেন, “জজের অনুপস্থিতে বিচার কার্য পরিচালনা করতে পারে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ। কিন্তু রাঙামাটিতে আদালত প্রতিষ্ঠার পর থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে আদালতে বিচারিক কাজে পুরো স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এখানে জজের পাশাপাশি অতিরিক্ত জজ ও যুগ্ম জজ নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। তখন আদালতের কার্যক্রমের গতি বাড়বে। বিচারপ্রার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে।”
সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক যগ্ম জজ এ্যডভোকেট দীপেন দেওয়ান বলেন, “জজ না থাকায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। ফলে বিচারপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল জজের হাতে। কিন্তু জজ না থাকায় এ আদালতের কাজও বন্ধ হয়ে আছে। এটি সুরহা হওয়া দরকার”
ক্ষোভ প্রকাশ করেই তিনি বলেন, “এভাবে একটি আদালত চলতে পারে না।”
পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রফিকুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “রাঙামাটি আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। কয়েক যুগের আগে একাধিক চাঞ্চল্য ঘটনার মামলাগুলোর একটিও নিষ্পত্তি হয়নি।”
এজন্য বিচারক সংকটকে দায়ী করে রফিকুল ইসলাম বলেন, “আদালতে মামলার জট বাড়ছে। এগুলো কমিয়ে আনার জন্য জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং একাধিক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দেওয়া দরকার। না হলে রাঙামাটির মানুষ ন্যায় বিচার পাবে না। না হলে শুধু মামলার জট বাড়তে থাকবে।”