করোনাভাইরাস টেস্টের রকমফের
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস টেস্টকে তিনটি বড় ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি পরীক্ষা করা হয় কারও শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে কি না, সেটি শনাক্ত করতে। অন্যদিকে, কেউ আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, সেই ফল জানায় বাকি পরীক্ষাটি।
চলুন জেনে নিই, এই তিন ধরনের পরীক্ষার কোনটির কী কাজ:
জেনেটিক টেস্ট
বেশির ভাগ টেস্টই করা হয় ভাইরাসটির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালের সন্ধানে। এ ক্ষেত্রে যার নমুনা পরীক্ষা হবে, তার নাক থেকে 'সোয়াব' সংগ্রহ করা হয়। আর তা সংগ্রহ করেন কোনো পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী। তারপর সেই নমুনা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ল্যাবে।
নমুনা পরীক্ষার এই পদ্ধতিকেই সবচেয়ে নির্ভুল ধরা হলেও এটি সম্পূর্ণ নিখুঁত নয়। ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য সংগৃহীত সোয়াবে যথেষ্ট পরিমাণ নমুনা থাকার দরকার পড়ে।
ল্যাবে এই নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। এ কারণে নমুনা সংগ্রহের পর অন্তত একদিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি রেজাল্ট পাবেন না। অবশ্য 'রেপিড টেস্টে'র ক্ষেত্রে ১৫ মিনিটের মধ্যেই রেজাল্ট পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, সোয়াবের বদলে মুখের লালা ব্যবহার করেও কোভিড-১৯-এর জেনেটিক টেস্ট করা যায়।
অ্যান্টিজেন টেস্ট
নতুন ধরনের এই পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের বদলে বরং ভাইরাসটির সারফেসে প্রোটেইনের সন্ধান করা হয়। এখন এইসব অ্যান্টিজেন পরীক্ষার বেশ জোয়ার চলছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এর ফলে নমুনা পরীক্ষার ব্যাপ্তি আরও বাড়ানোর পাশাপাশি রেজাল্টও দ্রুত পাওয়া যাবে।
অ্যান্টিজেন টেস্ট আসলে জেনেটিক টেস্টের মতো অত নির্ভুল না হলেও এটি করতে খরচ তুলনামূলক কম। তাছাড়া বিশেষায়িত ল্যাবরেটরি ইক্যুপমেন্ট কম নিয়ে, কম সময়ে এই পরীক্ষা করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রেও নাকের সোয়াবের প্রয়োজন পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল ডিভাইস কোম্পানি অ্যাবোট ল্যাবরেটরিজ সম্প্রতি ১৫ মিনিটে এই টেস্ট করানোর অনুমোদন দিয়েছে। স্কুল, অফিস ও অন্য যেকোনো লোকেশনে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা যায়।
অ্যান্টিবডি টেস্ট
একজন রোগীর রক্তের নমুনায় ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো প্রোটেইন রয়েছে কি না, অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে সেটি যাচাই করা হয়। ওই রোগী অতীতে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, এই পরীক্ষা সেই তথ্য জানিয়ে দেয়।
অ্যান্টিবডির পক্ষে রোগীকে আরেকবার আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব কি না কিংবা এই সুরক্ষার স্থায়িত্ব কত দিন- এ ব্যাপারে এখনো চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। এ কারণে অ্যান্টিবডি টেস্টগুলো মূলত গবেষণার কাজেই ব্যবহৃত হয়।
- সূত্র: এপি নিউজ