উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত
তেল বিক্রির কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ে রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকেখুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ধর্মঘট আহ্বান করেছে পেট্রোল পাম্প ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
এ ধর্মঘটের ফলে ওই তিন বিভাগে প্রায় দেড় হাজার পেট্রোল পাম্প থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ থাকবে।
সংগঠনটির কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রতন জানান, অকটেনের কমিশন ৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৭ শতাংশ, পেট্রোল ২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ডিজেল ২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩ শতাংশ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থা এ ধর্মঘটের বাইরে থাকবে। এছাড়া গাড়িতে গ্যাস দেয়াও চালু থাকবে।
তাদের ১৫ দফা দাবিগুলো হলো-
১। জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে সাত শতাংশ প্রদান,
২। জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরণ,
৩। প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন,
৪। ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি,
৫।পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল,
৬। পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল,
৭। পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল,
৮। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল,
৯। ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল,
১০। বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল,
১১। ট্যাংক-লরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ,
১২। সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতীত সরকারি অন্যান্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদেরকে অযথা হয়রানি বন্ধ,
১৩। নতুন কোনও পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু,
১৪। পেট্রোল পাম্পের পাশে যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক এবং
১৫। বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।
বগুড়ার মেহেরা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, ধর্মঘটের ফলে পেট্রোল, ডিজেল এবং অকটেন দেয়া বন্ধ আছে। তবে গ্যাস দেয়া অব্যাহত আছে।
রাজশাহীর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মনিমুল হক জানান, রাজশাহীর সব জেলাতেই ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, গতকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকায় ফেরার কথা আছে তার। সেক্ষেত্রে রাজশাহীতে রোববার বিকেল পর্যন্ত সরকারি সেবার কাজে নিয়োজিত গাড়িগুলোতে জ্বালানি তেল দেয়া চালু থাকবে বলে জানান মনিমুল হক।
শ্রমিকরা খুলনা নগরীর কাশিপুরের পদ্মা,মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি পালন করছে। ফলে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।