এক’শ ডাক্তারের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম চান জাফরুল্লাহ
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এক'শ ডাক্তার নিয়ে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন করে প্রাথমিক চিকিৎসা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
রোববার অনলাইনে "করোনা পরিস্থিতি ও জনজীবনের সংকট" বিষয়ে এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় এই সংকটে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আমাকে একশ জন ডাক্তার দেন। তাদের সাথে নিয়ে আমি বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিয়ে আসব। মানুষের হাসপাতালে আসার প্রয়োজন পড়বে না।
তবে এজন্য শুধু টাকা পয়সা নয়, বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকেরও প্রয়োজন। হিংসা বিদ্বেষ ত্যাগ করে সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এখন শুধু আইসিইউ এর সংখ্যা বৃদ্ধি করলে চলবে না। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এখন পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীদের সুবিধার্থে অক্সিজেনের উপর ভ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বাশখালীর ঘটনাকে বিনা বিচারে হত্যার শামিল উল্লেখ করে তিনি সর্বস্তরের জনগণকে অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে সোচ্চার হবার আহ্বান জানান।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে করোনার ভ্যাক্সিন তৈরির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন।
বেসরকারী পর্যায়ের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, জবাবদিহিতা নেই বলেই সরকার জনগণের প্রতি এমন দায়িত্বহীন আচরণ করতে পারছে।
পুলিশকে জনগণের জান মাল রক্ষার দায়িত্ব দেয় হয়েছে। কিন্তু তারা তা না করে দিন দিন নির্বিচারে গুলি বর্ষণের এক্সপার্ট হয়ে উঠছে।
বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামা শ্রমিকদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, নিহতদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অপরধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সারাদেশে কারখানার শ্রমিকদের বেতন নিশ্চিত করতে হবে। মোদি বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতারকৃদের মুক্তি ও শিক্ষার্থীদের বেতন মৌকুফের দাবি জানান তিনি।
লকডাউনে প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্যের নিশ্চয়তা দেবার পাশাপাশি, করোনার টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও চিকিৎসায় সরকারকে ভর্তুকি দেবার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, করোনা মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণে সরকার ব্যর্থ। এদিকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সাম্য বলতে কিছু নেই। এখানে হালাল ইনকাম করে করোনার চিকিৎসা করানোর মতো পরিস্থিতি নেই। হাসপাতালে গেলে লাখ টাকা বিল।
এদিকে জনগণকে মামলা দিয়ে হয়রানি করতে আবার পুলিশকে রাস্তায় নামানো হয়েছে। এসব বন্ধ করে জনসধারণের চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানোর পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এজন্য এখন তারা আর জবাবদিহিতার প্রয়োজনবোধ করেন না। সেজন্য মহামারি মোকাবেলায় তাদের পদক্ষেপও তেমন। এ অবস্থা চলতে থাকলে মহামারি আরো ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনটি দাবি সরকারের কাছে উত্থাপন করেন বক্তারা, এর মধ্যে বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। গরীব ও কর্মহীনদের দ্রুত বিনামূল্যে খাদ্যের ব্যবস্থা করা এবং স্বাধীনতা দিবস ও মুজিবনগর দিবসে পুলিশ গুলি করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করার দায়ে আইজিপির পদত্যাগ।