চট্টগ্রামে শনাক্ত ৯৩ শতাংশ রোগী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত: সিভাসু
চট্টগ্রামে শনাক্ত ৯৩ শতাংশ করোনা রোগী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়টি কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে।
জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের সুপারভাইজার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতমবুদ্ধ দাশ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের ১৫ এবং বিভিন্ন উপজেলার ১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। এরপর এ ৩০ জনের নমুনা বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) পাঠানো হয়। বিসিএসআইআরের দুই গবেষক ড. মো. সেলিম খান ও ড. মো. মোরশেদ হাসান সরকার তত্ত্বাবধানে নমুনাগুলোর জিনোম সিকোয়েন্সিং বা পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করা হয়।
জিনোম সিকোয়েন্সের ফলাফলে দেখা গেছে, মোট ৩০ জনের নমুনার মধ্যে ২৮ জনই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। শতকরা হিসেবে যা ৯৩ শতাংশ। আবার এদের মধ্যে ১৪ জন নগরের বাসিন্দা এবং ১৪ জন বিভিন্ন উপজেলার। বাকি দুজনের মধ্যে নগরের কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার এক বাসিন্দা আলফা ভ্যারিয়েন্ট (যুক্তরাজ্য) এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলার এক বাসিন্দা করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানের ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে জানা গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নমুনা নেওয়া ৩০ জনের মধ্যে ১৫ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়াদের মাধ্যমে চট্টগ্রামে ছড়িয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট
উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতমবুদ্ধ দাশ বলেন, "করোনার অতি উচ্চ সংক্রমণশীল ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট চট্টগ্রামের শহর ও গ্রামাঞ্চলে সমানভাবে ছড়িয়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সাধারণত অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ৪০ গুণ বেশি সংক্রামক। যেহেতু চট্টগ্রামের পাশে ভারতের সীমান্ত নেই, সেহেতু ধারণা করা হচ্ছে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া লোকজনের মাধ্যমে এ ভ্যারিয়েন্ট নিরবে চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া বন্দর ও অন্যান্য ব্যবসায়িক কাজে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোকজনের যাতায়াতের মাধ্যমে এ ভ্যারিয়েন্ট চট্টগ্রামে ছড়াতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "পরীক্ষার আওতায় আনা ৩০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স তথ্য গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি) প্রতিষ্ঠানে জমা করা হয়েছে।"
পোল্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টারের (পিআরটিসি) আর্থিক সহায়তায় এবং সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতমবুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন- প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ব্রিদীপ দাশ, ডা. প্রাণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।