জি কে শামীমের জামিন বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার প্রভাবশালী ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের জামিন বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এতে জামিন মঞ্জুর করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে তার জামিন সংক্রান্ত সকল নথি তলব করেছেন প্রধান বিচারপতি।
হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ মাসের প্রথম সপ্তাহে জি কে শামীমের জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন। এর মধ্যে মাদক মামলায় এক বছর এবং অস্ত্র মামলায় ছয় মাসের জামিন পান তিনি।
এর আগে শনিবার জানা যায়, কঠোর গোপনীয়তায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ৬ মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট। তবে জামিনের বিষয়ে জানা নেই বলে দাবি করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুর রহমান খান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। ঐ অভিযানে জি কে শামীমসহ যুবলীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের অফিস থেকে ৬ দেহরক্ষী ও বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, এফডিআর ও স্বর্ণালঙ্কারসহ গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে শামীমকে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, অর্থপাচার ও মাদক মামলা রয়েছে।
শামীমকে নিকেতন অফিস থেকে গ্রেপ্তারের পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারটি মামলা করে দুদক। এই চারটি মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর হাইকোর্টে জামিন চান।
মামলায় জিকে শামীম অবৈধ উপায়ে মোট ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এসব মামলায় একাধিকবার জি কে শামীকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় চার্জশিট হয়েছে। বাকিগুলো তদন্তাধীন রয়েছে।
এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ শামীমকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, আমরা নিম্ন আদালতের আদেশ ও জামিন আবেদন পর্যালোচনা করলাম। জামিন আবেদনকারীর আইনজীবীর বক্তব্যে সারবত্ত্বা থাকায় আবেদন মঞ্জুর করা হলো। ২৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া জামিন না মঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়েছিলেন তিনি।
এদিকে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ পাওয়ার মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চান শামীম। শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৪ ফেব্রুয়ারি তার এক বছরের জামিন মঞ্জুর করে।