নীল রক্তের লোভে বিলুপ্ত রাজ কাঁকড়া
ইংরেজিতে ‘ব্লু ব্লাড’ নামে একটি শব্দগুচ্ছ রয়েছে, যার অর্থ হলো অভিজাত বংশীয়। সপ্তদশ শতকে নীল রঙ ছিল খুব দামি। শুধুমাত্র অভিজাতরাই এই রঙের কাপড় কিনতে পারতো। সেখান থেকেই এসেছে শব্দগুচ্ছটি। তবে প্রকৃতিতেও এরকম এক প্রাণি আছে যার রক্ত সত্যিই নীল। রাজ কাঁকড়াই সেই জীব।
বঙ্গোপসাগরের অন্যতম ‘লিভিং ফসিল’ (জীবন্ত জীবাশ্ম) রাজ কাঁকড়ার রক্ত শুধু নীলই নয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ৪৫০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীতে বাস করে আসা এই প্রাণিটির অস্তিত্ব আজ সঙ্কটে। অভিযোগ রয়েছে, একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূল এলাকা থেকে রাজ কাঁকড়া ধরে থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। ফলে ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রাণিটি।
তবে, বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে প্রাণিটি হারিয়ে গেলেও এখনও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন দ্বীপ ও ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদঘেরা কাদা-বালুময় অঞ্চলে টিকে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে প্রাণিটি। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এর পর্যবেক্ষণেও বাংলাদেশে প্রাণিটির অবস্থান লাল তালিকায়।
রাজ কাঁকড়ার প্রতি গ্যালন নীল রক্তের দাম প্রায় ৬০ হাজার মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাময়িকী ও গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান কক্সবাজারস্থ সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের জেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক।
ওষুধ শিল্পের জন্য প্রতি বছর কয়েক কোটি রাজ কাঁকড়া শিকারের কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ অ ল থেকেই এই জীবন্ত ফসিলটি হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক স্থানে এই প্রাণিটির বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে এর উপর নির্ভরশীল ওষুধ শিল্প কারখানাও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখনও বঙ্গোপসাগরের কিছু এলাকায় রাজ কাঁকড়ার আবাসস্থল টিকে আছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও প্রজাতি ভেদে ভারত, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমুদ্র উপকূল, ইন্দো-প্যাসিফিক, ইন্দোনেশিয়ান, আমেরিকান আটলান্টিক উপকূল এবং মেক্সিকো উপসাগরীয় অ লে এই হর্সশ্যু ক্র্যাব পাওয়া যায়। তবে পুরো বিশ্বেই এটি ধীরে ধীরে বিপন্ন।
কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর সড়কের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন স্থানীয় জেলেদের বরাত দিয়ে বলেন, ২০-২৫ বছর আগেও শহরের বাঁকখালী নদীর মগচিতা পাড়া এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে ‘রাজ কাঁকড়া’ দেখা যেত। এরপর মাত্র ১০ বছর আগেও শহরের উত্তর নূনিয়াছড়ায় বাঁকখালী নদীর মোহনায় এদের দেখা যেত। গত চার বছর আগেও সোনাদিয়াতে প্রাণিটি দেখা গেছে। কিন্তু এটি এখন বিলুপ্তির পথে।
কিভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে এই কাঁকড়া
একই কথা জানান চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাইয়ূম। তিনি জানান, সীতাকুণ্ড এলাকার বিভিন্ন সমুদ্র উপকূলের নদী ও খালের মোহনায় এক সময় ঝাঁকে ঝাঁকে রাজকাঁকড়া দেখা যেত। অনেকদিন ধরে আর দেখা যাচ্ছে না।
বৃহত্তর চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলে রাজ কাঁকড়া কমে যাওয়ার কারণে অতিথি পাখির আগমনের হারও কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট সমুদ্র বিজ্ঞানী ও কক্সবাজারের সাবেক জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. ম কবীর আহমদ।
তিনি বলেন, ‘‘শীতকালে অতিথি পাখি হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে বাংলাদেশে আসে। এ সময় অতিথি পাখিরা এই কাঁকড়ার ডিম খেয়ে দূর্বল শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে।’’
রাজ কাঁকড়ার রক্ত কেন এত দামি?
শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য মেরুদন্ডী প্রাণিদের রক্তে যেমন হিমোগ্লোবিন থাকে, তেমনি রাজ কাঁকড়ার রক্তে রয়েছে হিমোসায়ানিন। আর হিমোসায়ানিনে থাকা কপার বা তামার কারণেই তাদের রক্ত নীল।
কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে এই প্রাণিটি ‘দিয় কিঁয়ারা’ (দৈত্য কাঁকড়া) নামেই বেশি পরিচিত।
সমুদ্র বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসাইন জানান, হর্সশ্যু ক্র্যাব চিকিৎসাক্ষেত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর অনন্য নীল রঙ অল্প পরিমাণে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণও শনাক্ত করতে সক্ষম। চিকিৎসা অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যাকটেরিয়াল এন্ডোটক্সিন শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত হয় এই নীল রক্ত।
মেরুদন্ডী প্রাণিদের রক্তে আছে শ্বেত রক্তকণিকা, যার কাজ হলো ক্ষতিকর জীবাণু শনাক্ত করা, রোগ প্রতিরোধ করা। অন্যদিকে অমেরুদন্ডী হর্সশ্যু কাঁকড়ার রক্তে রয়েছে অ্যামিবোসাইট। এতে আছে লিমুলাস অ্যামিবোসাইট লাইসেট বা এলএএল নামের এক রাসায়নিক উপাদান।
সাধারণত রক্ত পরীক্ষায় এন্ডোটক্সিনের উপস্থিতি ধরা পড়ে না। আর এখানেই রাজ কাঁকড়াদের ধন্যবাদ জানাতে হবে। তাদের রক্তের এলএএল এর সি ফ্যাক্টর মানুষের রক্তে এন্ডোটক্সিনের উপস্থিতিও ধরে ফেলতে পারে।
ল্যাবরেটরিতে জীবাণু আক্রান্ত রক্তের নমুনায় এই সি ফ্যাক্টর যোগ করে বিজ্ঞানীরা দেখলেন, জীবাণুর চারপাশের রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। তার মানে মেরুদন্ডী প্রাণির শরীরেও কাজ করে এই উপাদান। আর এভাবে রাজ কাঁকড়ার রক্ত থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে হর্স শ্যু কাঁকড়ার এই ব্যাপক ব্যবহারের কারণেই এর রক্তের এত দাম! তবে দামি নীল রক্তের জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা সৈকতে ডিম পাড়তে আসা কাঁকড়াদের শিকার করছে। এতে ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ রাজ কাঁকড়া।
কিভাবে শিকার হয় এই কাঁকড়া
প্রাপ্তবয়স্ক কাঁকড়া প্রজননকালে সমুদ্র উপকূলে আসে ডিম পাড়তে। একটি নারী রাজ কাঁকড়া বছরে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার পর্যন্ত ডিম দেয়। এর মধ্যে কয়েক হাজার বেঁচে থাকে বলে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে। কিন্তু ডিম পেড়ে ফিরে যাওয়ার পথে শিকারিদের হাতে আটকা পড়ে এই কাঁকড়াগুলো।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. শেখ আফতাব উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক হর্সশ্যু ক্র্যাব থেকে ৪০০ মিলিলিটার এবং অল্প বয়স্কদের কাছ থেকে মাত্র ৫০ মিলিলিটার রক্ত সংগ্রহ করার পর তা প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখানে প্রায় ৩০ ভাগ হর্সশ্যু ক্র্যাব নানাভাবে মারা যায়। হর্সশ্যু ক্র্যাবকে টিকিয়ে রাখার জন্য তার শরীর থেকে উন্নত বিশ্বে মাত্র ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ রক্ত টেনে নেয়া হয়। অনেক দেশে প্রায় সব রক্তই টেনে নেয়া হয়। এ সময় মারা যায় অনেক কাঁকড়া।
এদিকে, দেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলে রাজ কাঁকড়ার আবাসস্থল প্রায় হারিয়ে গেলেও গত দেড় বছর আগে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেকের ওপারে মহেশখালীর প্যারাবনে (ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের বাগান) পাঁচ-ছয়টি রাজ কাঁকড়ার একটি দলকে দেখতে পেয়েছেন বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. শেখ আফতাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘জীবন্ত জীবাশ্ম’ নামে পরিচিত বঙ্গোপসাগরের এই প্রাণিটি পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন প্রাণি। ৪৫০ মিলিয়ন বছরের বেশি সময় ধরে প্রাণিটি প্রকৃতির চরমতম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে আছে। অথচ এখন চরম বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে প্রাণিটি। বিশেষ করে ঔষধী গুণের কথা প্রচার হওয়ার পর প্রাণিটি পড়েছে চরম ঝুঁকির মুখে।
বাংলাদেশ থেকে যেভাবে পাচার হয় রাজ কাঁকড়া
কয়েকটি আন্তঃদেশীয় শক্তিশালী পাচারকারী চক্র দেশের মূল্যবান সম্পদটি বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। এ চক্রে রয়েছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি। যারা বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে এবং সমুদ্র দিয়ে চোরাই পথে পাচার করে দিচ্ছে রাজ কাঁকড়া ও কাঁকড়ার নীল রক্ত। এই কাজে কিছু ফিশ ফার্ম জড়িত বলেও দাবি করেছে বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি সূত্র।
বঙ্গোপসাগর থেকে রাজ কাঁকড়া ধরার পর কূলে এনে ল্যাবরেটরিতে সূক্ষ্ম উপায়ে রক্ত টেনে নেয়া হয়। আর সেই রক্ত সমুদ্রপথে স্পিড বোট বা ট্রলারে করে মাছধরা জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। আর মাঝ সাগরে মাছধরা ট্রলার থেকে কার্গো জাহাজে তুলে দেওয়া হয় রক্ত।
সাগর পথ ছাড়াও মাছসহ বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে নীল রক্ত পাচার হচ্ছে। আর প্রযুক্তিজ্ঞানের অভাবে সংশ্লিষ্টরা এই পাচার কাজ চিহ্নিত করতে পারছেন না বলে দাবি সূত্রটির।
সাম্প্রতিককালে দেশের সমুদ্র উপকূলে এই নীল রক্তের প্রাণির দেখা খুব কম পাওয়া গেলেও কক্সবাজার শহরের ঝাউতলাস্থ রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড-এর প্রদর্শনীতে বিভিন্ন আকারের ডজন খানেক জীবন্ত রাজ কাঁকড়ার দেখা পাওয়া যায়।
এই প্রাণিটি তারা কোত্থেকে ধরে আনে জানতে চাইলে রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডের পরিচালক শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘‘বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উৎস থেকে রাজ কাঁকড়ার পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের মাছসহ প্রায় ১৫০ প্রজাতির প্রাণি ধরে এনে আমরা প্রদর্শনীতে রেখেছি। এখানে আমাদের গবেষণা সেল এবং ল্যাবরেটরিও রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অনেক সমুদ্র বিজ্ঞানী এখানে গবেষণা করেন।’’
তিনি আরও জানান, সমুদ্র থেকে এসব প্রাণি আহরণের জন্য তাদের ‘রেডিয়েন্ট ফিশ রিসোর্স-১ (আরএসআর-১) নামে একটি জাহাজও রয়েছে। যেটা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সর্বোচ্চ দূরত্ব পর্যন্ত অনুসন্ধান চালাতে পারে।
বঙ্গোপসাগরের অন্যতম ‘জীবিত জীবাশ্ম’ নিয়ে তারা গবেষণা চালাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গোপসাগর থেকে রাজকাঁকড়া ধরে আনার পর আমরা ট্রিটমেন্ট করি, এরপর প্রদর্শনীতে রাখি। আবার এর কয়েকদিন পর নুনিয়াচড়ায় আমাদের পরীক্ষামূলক ঘেরে ছেড়ে দেই।’’
অপরদিকে, রাজ কাঁকড়ার ঔষুধী গুণাগুণ উম্মোচন করা গেলেও গত প্রায় ৭০ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে পৃথিবীর কোথাও ঘেরে বন্দী অবস্থায় কৃত্রিম উপায়ে এ প্রাণির প্রজনন করাতে বিজ্ঞানীরা সক্ষম হননি বলে জানান সমুদ্র বিজ্ঞানী আশরাফুল হক।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, জেনেছি ঔষধি গুনের কারণে রাজ কাঁকড়ার বৈশ্বিক কদর আকাশচুম্বী। এ কারণে উপকূল এবং শহর কেন্দ্রিক একটি চক্র রাজ কাঁকড়াটির সন্ধানে বেড়ায়। এসব কারণে হয়তো প্রাণীটি বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠেছে। উপকূলসহ সব জায়গায় ওসি ও সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রাণীটি পাচারে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে প্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা নিতেও বলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাজ কাঁকড়া নিয়ে ১৯৫০ সাল থেকে আমেরিকায় গবেষণা শুরু হলেও আমাদের দেশে কোনো গবেষণা হয়নি বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর জাহেদুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, এ প্রাণিটিকে টিকিয়ে রেখে কাজে লাগানো গেলে আমাদের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার পাশাপাশি ব্লু-ইকোনমি আরও শক্তিশালী হবে।
রাজ কাঁকড়ার ইংরেজি নাম হর্সশ্যু ক্র্যাব কেন?
হেলমেট আকারের ধূসর বর্ণের এই কাঁকড়াকে ইংরেজিতে বলে হর্সশ্যু ক্র্যাব। উল্টো পাশ থেকে দেখতে ঘোড়ার নালের আকৃতির বলে এর এমন অদ্ভুত নাম।
হর্সশু ক্র্যাবকে ‘জীবিত জীবাশ্ম’ বলা হয় কারণ, প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে আছে এটি। এই সময়ের মধ্যে পৃথিবী একাধিক বড় বরফ যুগের মধ্য দিয়ে গেছে। পাল্টে গেছে পৃথিবীর গঠন। উল্কার আঘাতে মারা গেছে ডাইনোসরসহ পৃথিবীর বেশিরভাগ জীবন।
কিন্তু এই অভিজাত রাজ কাঁকড়া বেঁচে আছে আজও। তবে বিশ্বব্যাপী এই প্রাণিটি কাঁকড়া হিসাবে পরিচিত হলেও এর শারীরিক গঠন ও ক্রিয়াকলাপ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা একে কাঁকড়া বলতে নারাজ। তাদের মতে প্রাণিটি স্করপিয়ন (বিচ্ছু) বা মাকড়সাদের আত্মীয়।
সমুদ্র বিজ্ঞানী আশরাফুল হক জানান, বিশ্বে চার প্রজাতির হর্সশ্যু ক্র্যাব (রাজ কাঁকড়া) দেখা গেলেও আমাদের অ লে পাওয়া যায় টেচিপ্লিয়াস ট্রাইডেন্টাটাস ও টেচিপ্লিয়াস গিগাস প্রজাতির হর্সশ্যু ক্র্যাব। তবে এগুলোও অনেকটা দুর্লভ বলে জানান তিনি।
(https://tbsnews.net/environment/pricey-blue-blood-causes-horseshoe-crabs-own-crisis-43155)