নুসরাত হত্যা মামলা অগ্রাধিকার পাবে হাইকোর্টে
ফেনীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) ও আসামিদের আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার ও বিচারপতি শাহেদ নূরুদ্দিনের বেঞ্চে এ মামলার শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এই ডেফ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করবেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। ইতোমধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক (মামলার যাবতীয় নথি) ছাপানো শেষ করা হয়েছে। পরে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে শুনানির জন্য মামলাটি প্রধান বিচারপতি কাছে গেলে তিনি শুনানির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্টে পৌঁছে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ হলে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। সে অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এছাড়া আসামিরা জেল আপিল ও কয়েকজন আপিল করেছেন।
গত বছরের ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে (১৬ আসামি) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে একলাখ টাকা করে জরিমানা দণ্ডেও দণ্ডিত করেন।
২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মাদ্রাসার সে সময়কার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় মাদ্রাসা-অধ্যক্ষের নির্দেশে কয়েকজন নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চার দিন ভুগে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। সারাদেশে এই ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে ঝড় ওঠে। নুসরাত হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করতে থাকেন সবাই। নুসরাতের পরিবার ২৭ মে মামলা দায়ের করে।
২৯ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলার তদন্ত শুরু করে। তাদের দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে প্রধান অভিযুক্ত সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করা হয়।