বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে খুনি মাজেদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
ফাঁসির মঞ্চে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি খুনি আব্দুল মাজেদ। ৫ মিনিট ঝুলিয়ে রাখার পর তার লাশ ফাঁসির মঞ্চে থেকে নিচে নামিয়ে আনা হয়।
মাজেদের ফাঁসির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ১১ আসামির মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। আরও পাঁচ আসামি এখনো দেশের বাইরে পলাতক অবস্থায় আছে।
রাত ১১টার দিকে মাজেদের স্ত্রী সালেহা তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করে আসেন। মাজেদের গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহান উদ্দিনেও নেওয়া হয়েছে দাফনের প্রস্তুতি।
অতিরক্ত আইজি প্রিজন্স, ডিআইজি প্রিজন্স, সিনিয়র জেল সুপার, ঢাকার সিভিল সার্জন, কারাগারের দুজন সহকারী সার্জন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি রাত ১১টার মধ্যে কারাগারে প্রবেশ করেন।
মৃতদেহ রাখার জন্য আগেই কফিন এনে রাখা হয়। মাজেদের দণ্ড কার্যকরে প্রধান জল্লাদ ছিলেন শাহজাহান, তার সহকারী হিসেবে ছিলেন মনির ও সিরাজ।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট যে সেনা সদস্যরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করেছিল, মাজেদ তাদেরই একজন।
অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ হয় ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে। বিচারের সর্বোচ্চ আদালত থেকে ১১ জনের ফাঁসির রায় দেন। এরমধ্যে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও মাজেদসহ ছয়জন পলাতক থেকে যান।
প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ভারতের পালিয়ে থাকার পর গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাজেদ। তার দণ্ড কার্যকর করতে বুধবার ঢাকার জজ আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় বহু বছর আগেই পেরিয়ে যাওয়ায় আবদুল মাজেদের সামনে সেই সুযোগ ছিল না। ফাঁসির দড়ি এড়ানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার রাতেই সে আবেদন নাকচ করে দিলে মাজেদের দণ্ড কার্যকর করার পথে সব বাধা কাটে।