বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে বিক্রির জন্য টিকার ডোজ সরবরাহ পেছালো সেরাম, প্রাধান্য দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিকে
সরকারকে সরবরাহের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি করা টিকার ডোজ বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। কিন্তু, আজ বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংস্থাটি জানিয়েছে, রপ্তানিকারক ভারতীয় সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউড অব ইন্ডিয়া বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য প্রথম চালান দিতে দেরি করবে। পরিবর্তে সেরাম গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে টিকাদান কর্মসুচিকে।
দেশের বাজারে সেরাম উৎপাদিত অক্সফোর্ড/ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার একমাত্র বিপণনকারীর সত্ত্ব পেয়েছে বেক্সিমকো। সেরাম এটি কোভিশিল্ড নামে বাজারজাত করবে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে।
গত সপ্তাহেই সরকারের কাছে বিক্রির জন্য সেরাম থেকে ৫০ লাখ ডোজের চালান পায় বাংলাদেশি ফার্মা জায়ান্টটি। সামনের সপ্তাহের রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি টিকাদান কর্মসূচি। সেখানে সরবরাহ করতেই চালানটি পায় বেক্সিমকো।
এর বাইরে বেসরকারিখাতে বিক্রির জন্য ১০ লাখ ডোজের ক্রয়াদেশ দেয় কোম্পানিটি। চলতি মাসেই তারা প্রথম চালানটি পাবে, এমন আশাও করেছিল।
তারপরেই দেরির ব্যাপারে জানানো হলো। বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া বেক্সিমকোর নথিতে জানানো হয়, "সেরাম আমাদের বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের টিকাদান কর্মসূচিকে তারা প্রাধান্য দিচ্ছে। এজন্য প্রথম চালান (৫ লাখ ডোজ) আসতে দেরি হবে। এছাড়া, তারা জাতিসংঘের কোভ্যাক্স উদ্যোগে সরবরাহের জন্যেও চুক্তিবদ্ধ। কোভ্যাক্স প্রথমে সকল দেশের সরকারি টিকাদান কর্মসূচিতে সরবরাহের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।"
'তবে দেরি কতদিন হবে তা অনিশ্চিত।'
বেক্সিমকোর প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা গত মাসে রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন যে, বেসরকারিভাবে বিক্রির জন্য তার কোম্পানি ৩০ লাখ ডোজ কিনতে পারে। তবে এজন্য তারা ডোজপ্রতি ৮ মার্কিন ডলার মূল্য দেবে।
সরকারি কর্মসূচিতে ৪ ডলারে টিকা সরবরাহের চুক্তি করলেও, বেসরকারি পর্যায়ে দ্বিগুণ এ দামে কেনার কথা জানায় সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মূল্যের ব্যবধান প্রকাশও করে।
তবে টিকার পর্যাপ্ত চালান অ্যাস্ট্রাজেনেকার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সমস্যায় রূপ নিয়েছে। ইতোপূর্বে, সংস্থাটি ইউরোপিয় ইউনিয়নকে চুক্তি অনুসারে পর্যাপ্ত ডোজ সরবরাহ করা যাবে না বলে জানালে, জোটটির সঙ্গে তাদের সম্পর্কের তিক্ততা সৃষ্টি হয়।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সকল দেশে সমানভাবে টিকা সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, বিভিন্ন দেশের প্রতি বাড়তি চালান পাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি না করার আহবানও জানিয়েছে হু।
- সূত্র: রয়টার্স